যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাস টার্মিনালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা বাংলাদেশি যুবক আকায়েদ উল্লাহর বাংলাদেশে অবস্থানের সময় কোনো ধরনের অপরাধ পায়নি পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, আকায়েদ আমেরিকায় গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে থাকতে পারেন।
আকায়েদের স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িকে রাজধানীর বাসা থেকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের একদিন বাদে আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এসব কথা জানান কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসির) প্রধান মনিরুল ইসলাম।
‘আকায়েদ বাংলাদেশে থাকার সময় তাঁর সম্পর্কে পুলিশের কাছে কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সে হয়তো আমেরিকায় গিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন’, যোগ করেন সিটিটিসির প্রধান।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, জিরো টলারেন্সের বাংলাদেশের একজন নাগরিকের এমন কর্মকাণ্ড দুশ্চিন্তার বিষয়। তাই এই ঘটনা অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত সোমবার সকালে ম্যানহাটন পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে শরীরে বাঁধা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান আকায়েদ উল্লাহ। এতে তিনি নিজে এবং আরো তিনজন আহত হন।
গতকাল মঙ্গলবার প্রসিকিউশন আকায়েদের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে অভিযোগ দায়ের করে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেওয়া এবং জনবহুল এলাকায় অস্ত্র ও বোমার ব্যবহার।
আকায়েদ বাংলাদেশি। ২০১১ সালে অভিবাসী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন আকায়েদ। নিউইয়র্কে ভাড়ায় গাড়ি চালাতেন তিনি। তবে সম্প্রতি তাঁর লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।
এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জিগাতলায় মনেশ্বর রোডের একটি বাসা থেকে আকায়েদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই, শ্বশুর জুলফিকার হায়দার ও শাশুড়ি মাহফুজা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন সিটিটিসি সদস্যরা।
আজ এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আকায়েদের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের কাছে থেকে জানা গেছে, আকায়েদ ২০১১ সালে পরিবারের সঙ্গে আমেরিকায় গিয়েছে। তখন তিনি ঢাকা সিটি কলেজের বিবিএর ছাত্র ছিলেন।
বাংলাদেশে আসার পর আকায়েদ কাদের সঙ্গে মিশেছিলেন, এ দেশে তাঁর কোনো সহযোগী আছে কি না বা জঙ্গিবাদে জড়িত এমন কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান মনিরুল।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন আকায়েদ। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। চলতি বছর ১০ জুন সন্তানের জন্ম দেন জুঁই। সন্তানকে দেখতে গত ২২ সেপ্টেম্বর আকায়েদ বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নিউইয়র্কে ব্রুকলিনে পরিবারের সঙ্গে থাকেন মার্কিন গ্রিনকার্ডধারী আকায়েদ। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে।