রাজধানীতে ইয়াবাসহ পুলিশের এক কনস্টেবলসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল সাইদুর রহমান (৩৫) ও তাঁর সহযোগী রেজাউল ইসলাম (৩১)। তাঁদের কাছ থেকে ৩ হাজার ২০০টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ইয়াবা বহনে ব্যবহার করা একটি মোটরসাইকেল।
কনস্টেবল সাইদুর রাজধানীর ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি-পেট্রল) জিয়াউল আলমের গাড়ির চালক ছিলেন। সাইদুর ও রেজাউলের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন মতিঝিল-যাত্রাবাড়ী এলাকায় ইয়াবার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা করে আসছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে রোববার হাজির করে সাইদুর ও রেজাউলের পাঁচ দিন রিমান্ড চায় ডিবি পুলিশ। পরে ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সাঈদ শুনানি নিয়ে তাঁদের দুই দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক শেখ নাজমুল আলম বলেন, ইয়াবাসহ হাতেনাতে কনস্টেবল সাইদুর ও রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (রাজস্ব) অফিসের পূর্ব পাশের রাস্তার গোডাউনের সামনে থেকে রাত নয়টার দিকে সাইদুর ও রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ডিবি অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দলাল চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এই মামলা করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন ডিবির উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম।
আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে ডিবি বলেছে, সাইদুর ও রেজাউল স্বীকার করেছেন যে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে পলাতক আসামিদের সঙ্গে নিয়ে যাত্রাবাড়ী, মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে আসছেন। এজাহারের বক্তব্য অনুযায়ী, সহযোগী আসামি ওমর আলীসহ কয়েকজন পলাতক রয়েছেন।
সাইদুর রহমান নয় বছর ধরে ওয়ারী জোনের গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নেত্রকোনার রোহা ইউনিয়নের কারী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ঢাকায় শ্যামপুরের ব্যাংক কলোনিতে তিনি বসবাস করেন। রেজাউল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নওহাটি গ্রামের বাসিন্দা।
কনস্টেবল সাইদুর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ওয়ারীর উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ইয়াবাসহ ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছেন।
ওয়ারীর এসি (ট্রাফিক) জিয়াউল আলম বলেন, সাইদুর তাঁর গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি শুধু জানতে পেরেছেন, ইয়াবাসহ সাইদুরকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। তিনি আরও বলেন, যিনি অপরাধ করেছেন দায়ভার তাঁর।
ডিবি উত্তর বিভাগের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক শেখ নাজমুল আলম বলেন, অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আগেই সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন রেজাউল। কনস্টেবল সাইদুরকেও মাদক ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রের সব সদস্যকে বিচারের আওতায় আনা হবে।
সূত্র: প্রথম আলো।