রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসান এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন না করা হলে গয়েশ্বরের আইনজীবীরা তার জামিন আবেদন করে। এ সময় আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন বলেই গয়েশ্বর চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ছাড়াও রাজধানীতে মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও প্রিজন ভ্যানের তালা ভেঙে দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শাহবাগ ও রমনা থানায় দায়ের হওয়া পৃথক চার মামলায় বিএনপির ৫৫ জন নেতা-কর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একই আদালত।
জানা গেছে, এ ব্যাপারে বিএনপির আইন সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়াসহ বিএনপিপন্থী চারজন আইনজীবী এদিন আদালতকে বলেন, পুলিশের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালাননি। বরং পুলিশ নিজের লোক দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। যাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে, তাদের কারও বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতের কাছে আরো দাবি করেন, আসামিদের মধ্যে কয়েকজন আছেন, যাঁরা বৃদ্ধ। গতকালের হামলার ঘটনার সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন থানা ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে দু–তিন দিন আগে এসব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল এ ঘটনা ঘটিয়ে তাঁদের এই মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সরকারি কৌঁসুলি সাজ্জাদুল হক আদালতে বলেন, আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ইটপাটকেল ছুড়ে আক্রমণ করেছে। নাশকতা চালিয়েছে। কেন পুলিশের ওপর এই আক্রমণ এবং কোন নেতারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে তা খুঁজে বের করার জন্য এই আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় হাইকোর্টের কদম ফোয়ারার মোড়ে বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও প্রিজন ভ্যানের তালা ভেঙে আটক দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। পুলিশের দাবি, এতে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আশরাফুল আজিমসহ কয়েকজন আহত হন। পরে এ ঘটনায় শাহবাগ ও রমনা থানায় পৃথক চারটি মামলা দায়ের করা হয়।