নিজস্ব প্রতিনিধি: শারীরিক প্রতিবন্ধি কিংবা পঙ্গুত্বকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে জীবন সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করে চলেছেন আলাউদ্দীন নামের এক ব্যক্তি। পাশাপাশি মহিলারাও যে পুরুষের চেয়ে কোন দিক থেকে কম নয় তারই প্রমানের স্বাক্ষর রেখেছেন ওই প্রতিবন্ধী মানুষটির স্ত্রীও। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে নিয়মিত বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ করে দরিদ্রতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাবলম্বি হচ্ছেন তারা। উপজেলার পূর্ব সোনাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আফিল উদ্দীনের পুত্র জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধি আলাউদ্দীন (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া খাতুন (৩০) এমনই অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- পূর্ব সোনাবাড়িয়ার ফসলি মাঠে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে তাদের ১১কাঠার জমির বেগুন ক্ষেতে পরিচর্যা করছেন। নিজেরা সবজি চাষের পাশাপাশি সোনাবাড়িয়া বাজারে ছোট একটি কাচামালের অর্থাৎ তরিতরকারির দোকানও দিয়েছেন আলাউদ্দীন। ‘স্বাভাবিক শরীর’ পক্ষে না থাকলেও নিজের ইচ্ছাশক্তির জোরে সেটিকে তুচ্ছ করে জীবন সংগ্রামে সাবলম্বি হওয়ার প্রত্যয়ে অটুট আছেন তাঁরা।
তারা জানান- বছর দশেক আগে তাদের বিয়ে হয়। ৫বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে তাদের। প্রতিবছর নিজেদের অল্প জমিতে নিজেরাই বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি ফসল চাষাবাদ করে পাইকরি ও খুচরা বিক্রয় করেন।
আলাউদ্দীন জানান- ‘বেগুন চাষে এখন পর্যন্ত আনুমানিক হাজার দুয়েক টাকা খরচ হয়েছে আর ফলনকৃত বেগুন বিক্রয় করেছেন প্রায় ৫হাজার টাকা। এখনো গাছে বেগুন আছে, সেগুলো বিক্রয় হবে। এছাড়া আরেকটি ১০কাঠার জমিতে পটল ও পিয়াজ চাষ করছেন। প্রতি বছর খরচ খরচা বাদ দিয়ে সঞ্চয়ও করতে পারছেন।’
তিনি আরো জানান- ‘সরকার প্রদত্ত প্রতিবন্ধি ভাতা থেকে তিন মাস অন্তর ১হাজার ৮’শ টাকা পান। সবমিলিয়ে দরিদ্রতাকে বিদায় জানাতে কঠোর পরিশ্রম করছেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনে। জন্মগতভাবে বাম পা খারাপ থাকলেও কোন জনমজুরি না নিয়ে স্ত্রী ও নিজে-ই সবজি আবাদ করে থাকেন।’
সমাজের ও এলাকার অনন্য দৃষ্টান্ত শারীরিক প্রতিবন্ধি আলাউদ্দীন ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়াকে স্যালুট সংবাদকর্মীদের পক্ষ থেকে। কারণ তাদের দেখে কেউ না কেউ যদি উদ্বুদ্ধ হন তবেই আমাদের লেখনির স্বার্থকতা।
পূর্ববর্তী পোস্ট