ছাবাহার বন্দর ও বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা সহ ইরানের সঙ্গে শনিবার ৯টি চুক্তি হল ভারতের। গুরুত্ব পেল শক্তি, যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তার মতো বিষয়গুলি। ভিসা নীতি সরলতর করতেও চুক্তি হয়েছে দুই দেশের।
তিন দিনের ভারত সফরের শেষ পর্বে শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিকে রাষ্ট্রপতি ভবনে অভ্যর্থনা জানান দেশটির রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী মোদি।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘ভারত ও ইরানের সম্পর্ক আরো মজবুত হল। আমরা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করে তুলতে চাই। আরও মজবুত করতে চাই সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে। ছাবাহার বন্দর তৈরি হওয়ার পর আফগানিস্তানের মতো একটি স্থলবেষ্টিত দেশের সামনে যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ এসে গেল।’
জানুয়ারিতে ভারত সফরে এসেছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু। তার এক মাসের মধ্যেই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আরব দুনিয়ায় ভারসাম্য বজায় রাখতে।
আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় বা তার আগে থেকেই তেহরানের ‘ঘোর শত্রু’ তেল আভিভ। তাই এই সময় ইরানের প্রেসিডেন্টের ভারত সফর ও তেহরানের সঙ্গে দিল্লির ৯টি চুক্তি হওয়ার ঘটনাটিকে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভারসাম্য বজায় রেখে চলার নীতিরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, আবার ‘ব্যালান্সের খেল’ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পরেই ফিলিস্তিন ঘুরে এসে তেল আভিভের ‘ঘোর শত্রু’ ইরানের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কটাকে আরও মজবুত করে তোলার পথে এগল দিল্লি।
পাকিস্তানকে এড়িয়ে ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের ‘ট্রানজিট রুট’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে এ দিন চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে ছাবাহার বন্দরের বিষয়টি। সমুদ্রবন্দরটি বানানো হচ্ছে সাড়ে ৮ কোটি ডলার ব্যয়ে। পাকিস্তানের গোয়াদরে চীনের অর্থ সাহায্যে যে সমুদ্রবন্দরটি তৈরি হচ্ছে, তার থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ছাবাহার।
তেহরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ছাবাহার বন্দর নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার ব্যাপারে ভারতের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
ভারত অবশ্য ইতিমধ্যেই ছাবাহার বন্দরের মাধ্যমে ১১ লক্ষ টন গম পাঠিয়েছে আফগানিস্তানে।