খুলনা : খুলনা জেলা বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোড়লকে কেউ অপহরণ বা গুম করেনি। ১৫ লাখ টাকা দেনার দায়ে তিনি কক্সবাজারের রামুতে আত্মগোপন করেছিলেন।
শুক্রবার বিকেলে খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে নজরুল এ স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। এর আগে দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের বিচারক রওশন আরা রহমানের কাছে নজরুল একইভাবে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা বলেন, গত ১৭ মার্চ নজরুল যশোরের কেশবপুর হয়ে ঢাকায় যান। পরের দিন ঢাকা থেকে কক্সবাজারের রামুতে যান। রামুতে সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে থাকতো নজরুল। ইতোপূর্বে গ্রেফতার হয়ে খুলনা কারাগারে থাকাকালীন সাইফুলের সঙ্গে পরিচয় হয় নজরুলের।
পুলিশ সুপার বলেন, নজরুল কক্সবাজারে গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে নতুন মোবাইল ও সিমকার্ড ব্যবহার শুরু করেন। সেখানে গিয়ে তিনি তার দাড়ি কামিয়ে ফেলেন। পলাতক থাকা অবস্থায় একদিন কক্সবাজার পুলিশের সন্দেহ হলে নজরুল কোথা থেকে এখানে এসেছে এবং কি করে জানতে চায়। নজরুলের কথাবার্তা এলোমেলো মনে হয় পুলিশের। একপর্যায়ে খুলনার ডুমুরিয়ায় যে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতো নজরুল সেই মাদ্রাসার অপর এক শিক্ষককে ফোন করে নিশ্চিত হয় তার বাড়ি খুলনায়। খুলনার ডুমুরিয়ার ওই শিক্ষকের কাছে করা ফোন নম্বরের সূত্র ধরে মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হয় নজরুল রামুতে আছেন। পরবর্তীতে কক্সবাজার পুলিশের সহায়তায় খুলনা জেলা পুলিশ ও ডিবি অভিযান চালিয়ে গত বুধবার রাতে রামু থেকে বিএনপি নেতা নজরুলকে উদ্ধার করে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) এস এম শফিউল্লাহ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) সজীব খান, ডিবির ওসি শিকদার আক্কাস আলী ও ডুমুরিয়া থানার ওসি হাবিল হোসেন।
উল্লেখ্য, ১৭ মার্চ বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন বিএনপি নেতা নজরুল। স্বামী নজরুলের নিখোঁজের ঘটনায় ওই দিন রাতে স্ত্রী তানজিলা বেগম ডুমুরিয়া থানায় একটি জিডি করেন। পরের দিন জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নজরুলকে গুম করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।