চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের ইউনিএইড নামের ওই কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়াকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ভিডিওটি গত ১৭ ফেব্রুয়ারির বিকেলের।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, সিগারেট হাতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ক্ষুব্ধ ভঙ্গিতে কথা বলার এক পর্যায়ে রাশেদ মিয়ার ওপর চড়াও হন; একের পর এক চড় মারতে থাকেন, মাঝে মাঝে রাশেদের চুল ধরে মারেন।
মারধরের ঘটনাটি ওই কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তারপর ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি ভাইরাল হবার পর সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন রনি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার পাঁচলাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন রাশেদ। অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগে রাশেদ বলেছেন, রনি এবং তার সহযোগীরা জিইসি মোড়ে তার কার্যালয়টি ব্যবহার করতেন। তাদের নিষেধ করায় রনি ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই কার্যালয়ে গিয়ে তাকে মারধর করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
১৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনাকে একটি ‘অপ্রীতিকর ঘটনা’ বললেও চাঁদা দাবির কথা অস্বীকার করেছেন রনি। তার দাবি, ওই কোচিং সেন্টারে তার অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যে সন্ধ্যায় সংগঠন থেকে পদত্যাগ করার বিষয়টি নিজের ফেসবুক জানান নুরুল আজিম রনি। মহানগর ছাত্রলীগের প্যাডে লেখা অব্যাহতিপত্রটি রনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখেছেন।
অব্যাহতিপত্রে রনি উল্লেখ বলেছেন, পিতা মুজিবুরের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সজ্ঞানে অব্যাহতি নিলাম। একান্ত ব্যক্তিগত কারণে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
গত কয়েক বছরে এইচএসসি ও এসএসসিতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন রনি।
তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনের কারণে নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ এএসসি ও এইচএসসিতে নেওয়া অতিরিক্ত ফি ফেরত দিতে বাধ্য হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধেও তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে আন্দোলন করে ছাত্রলীগ।
সম্প্রতি এইচএসসিতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ ওঠা চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগে মামলা হয় রনির বিরুদ্ধে।