আমাদের দেশে প্রতিদিন সকালের নাস্তায় রুটি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু স্বাস্থ্যসচেতন মানুষরা প্রায়ই একটা বিষয়ে দুশ্চিন্তা করেন। ভালো আটা কোনটা? স্রেফ গম ভাঙানো আটা ভালো, নাকি পরিশোধিত আটা ভালো? আসলে পরিশোধিক আটাকে আমরা ময়দা বলি। এখানে এদের সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রস্তুতপ্রণালী
আটা এবং ময়দা বানানোর প্রক্রিয়া আসলে ভিন্ন। গম পিষে তৈরি করা হয় আদা। এতে গমের বীজের সঙ্গে তার খোসাও পিষে ফেলা হয়। এ কারণে আদার রং অনেকটা বাদামী হয়। কিন্তু ময়দা বানাতে আটাকে পরিশোধিত করা হয়। আলাদা করা হয় খোসা। এ কাজটি কয়েক দফা করলেই ময়দা মেলে। এ কারণে ময়দার রং ধবধবে সাদা হয়।
আটাই বেশি স্বাস্থ্যকর
ময়দার চেয়ে আটাকে বেশি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। কারণ আটায় প্রচুর ফাইবার থাকে যা ভক্ষণযোগ্য। এতে ভিটামিন এবং খনিজও থাকে বেশি। কিন্তু ময়দায় তেমন কিছু থাকে না। এতে অবশ্য ক্যালোরিও থাকে না।
রাসায়নিক ব্লিচ
ময়দাকে ‘অল পারপাসস ফ্লাওয়ার’ বলা হয়। এর সুন্দর শুভ্র চেহারা ও মসৃণতা আনার জন্যে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে ব্লিচ করা হয়। কিন্তু আটায় এসব প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয় না। ফলে তা থাকে অনেক বেশি সাস্থ্যকর এবং উপাদেয়।
পুষ্টি উপাদান
আটায় অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান মেলে। এতে আছে ফোলেট, রিবোফ্লাভিন এবং ভিটাইম বি১, বি৩ এবং বি৫। এদিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ময়দা। পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসলে আটা থেকে প্রায় সব পুষ্টি উপাদান বেরিয়ে যায়।
ফাইবার
সাদা ময়দার চেয়ে আটায় অনেক বেশি ফাইবার থাকে। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারে অনেক উপকার। কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ওজন হ্রাস করে।
অন্যান্য উপাদান
আটায় তাকে অ্যামাইনো এসিড এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট। এগুলো দেহের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে। উদ্বেগ, ঘুম না আসা, মাথাব্যথা এবং বিষণ্নতা সারাতে এই উপাদানগুলো বেশ কাজ করে।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
পরিশোধিত আটা বা ময়দা গ্লাইসেমিকক ইনডেক্সে আটার অনেক ওপরে অবস্থান করে। এই ইনডেক্সে যারা ওপরে অবস্থান করে সে সব খাবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে ইনসুলিন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
ভিন্ন ব্যবহার
সাধারণ ময়দা ব্যবহৃত হয় কেক, কুকি, পাস্তা, নুডলস, মাফিন এবং নানরুটি বানাতে। আর রুটি, পুরি এবং ডেজার্ট বানাতে লাগে আটা।