দূর দূরান্তে ড্রোন উড়িয়ে দেশব্যাপী কোটি কোটি পুরুষ মশা ছেড়ে দিচ্ছে ব্রাজিল। মশা বাহিত রোগ জাইকা ও ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার।
জানা গেছে, ড্রোন উড়িয়ে কয়েক কোটি বাঁজা মশা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ব্রাজিলের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে সেই মশা। এই পদ্ধতিতে কাজ শুরুর আগে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। তারপরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রাজিলে মশা বাহিত রোগ জাইকার প্রভাবে গুরুতর ক্ষতির মুখে পড়ে ব্রাজিল। ২০১৫-১৬ সালে মহামারি আকার নেয় জাইকা। হাজার হাজার শিশু আক্রান্ত হয় এই রোগে। জাইকা ভাইরাসে আক্রান্ত মায়েরা হাজার হাজার অসুস্থ শিশু জন্ম দিতে থাকেন।
গবেষণাগারে প্রজনন করা এই বাঁজা মশাগুলো এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার পর এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে বলে আশা ব্রাজিল সরকার। পুরুষ এডিস মশাগুলোকে ল্যাবরেটরিতেই তৈরি করে এলাকায় ড্রোন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা নারী মশাদের সঙ্গে মিলিত হবে। কিন্তু জাইকা ডেঙ্গুর মত মরণ রোগ ছড়ানো মেয়ে মশারা ডিম পাড়লেও সেই ডিম নষ্ট হয়ে যাবে। ইউনাইটেড নেশনের ইন্টারন্যাশনাল অটোমিক এনার্জি এজেন্সি এই তথ্য জানিয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যেই এক মিলিয়ন মশা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ব্রাজিলের। তিন মাস ধরে এইভাবে মশা ছড়ানো হচ্ছে। মশা ঠিক যে সময় সবচেয়ে বেশি জন্মায় সেসময়ই জুয়াজেইরো এবং রিসিফির উত্তরপূর্ব শহরগুলোতে ড্রোন উড়িয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে তাদের।
উই রোবোটিকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম ক্লাপটোজ জানিয়েছেন, ‘এই প্রথম ড্রোন দিয়ে বিরাট সংখ্যক মশা সফলভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আমরা এই পদ্ধতির মাধ্যমে অসংখ্য মশা পরিবেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এটি খুবই কার্যকরী উপায়। এখনও ড্রোনগুলোতে খানিকটা উন্নতি করার দরকার রয়েছে। যাতে প্রতিবারে আরও অনেক বেশি মশা বহন করা যায়।’
বয়ার জানিয়েছেন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মন্টেনেগ্রো এবং গ্রিস এই ড্রোনের প্রতি উৎসাহ দেখিয়েছে। তারাও পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন দিয়ে শহরে বাঁজা মশা ছড়াতে চান। যাতে মশা ও পতঙ্গের বংশরোধ করা সম্ভব হয়।