ব্রিটেনের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাজিদ জাভিদ। এই প্রথম কোনও মুসলিম ব্রিটেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন।
অভিবাসীদের প্রতি নির্মম আচরণের দায় নিয়ে গতকাল রোববার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান অ্যাম্বার রাড। আজ সোমবার সকালেই সাজিদ জাভিদকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
৪৮ বছর বয়সী সাজিদ জাভিদ পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। প্রথম কোনো অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব পেলেন। সাজিদ জাভিদের নিয়োগকে চলমান অভিবাসন বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের পানি ঢালার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিভক্ত মন্ত্রিসভার ভারসাম্য রক্ষার কাজটিও অনেকটা সামাল দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘উইন্ডরাশ জেনারেশন’ (১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসী)–এর প্রতি নির্মম আচরণ এবং জোরপূর্বক অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে থেরেসা মের সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সাজিদ জাভিদের প্রথম কাজ হবে এ বিতর্ক সামাল দিয়ে কনজারভেটিভ দলের প্রতি অভিবাসী জনগোষ্ঠীর আস্থা ফিরিয়ে আনা। এ ছাড়া মাত্রা ছাড়ানো ‘নাইফ ক্রাইম’ (চাকু দিয়ে হামলা), পুলিশের বাজেট কর্তনের যৌক্তিকতা প্রমাণ এবং সন্ত্রাসী হামলার নিয়মিত ঝুঁকি মোকাবিলা হবে তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ।
যুক্তরাজ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যতম একটি বিভাগ। এই বিভাগের মন্ত্রী হওয়াটা যেমন সম্মানের, তেমনি অভিবাসনে ভারসাম্য রক্ষা ও সন্ত্রাস দমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের কারণে এটি বেশ চ্যালেঞ্জের। দায়িত্বে ভুল করার কারণে বেশ কয়েকবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।
সাবেক ব্যাংকার সাজিদ জাভিদ ২০১০ সালে কনজারভেটিভের পক্ষে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি সম্প্রদায় ও স্থানীয় সরকারবিষয়ক মন্ত্রী (কমিউনিটিজ অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে এক বছর তিনি বাণিজ্য, উদ্ভাবন ও দক্ষতাবিষয়ক মন্ত্রী (বিজনেস ইনোভেশন অ্যান্ড স্কিলস সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রমসগ্রোভ আসনের এমপি সাজিদ জাভিদের জন্ম ল্যাঙ্কাশায়ারের রচডেল এলাকায়। তাঁর বাবা ছিলেন বাসচালক। উইন্ডরাশ বিতর্ক প্রসঙ্গে গত রোববার এক সাক্ষাৎকারে সাজিদ জাভিদ বলেন, সরকারের অভিবাসন–নীতিতে ত্রুটি আছে। উইন্ডরাশ প্রজন্ম যে দুর্ভোগের শিকার হয়েছে, তাঁর বাবা, মা কিংবা তিনি নিজেও এই পরিস্থিতির শিকার হতে পারতেন। তাঁর বাবা ১৯৬০ সালে যুক্তরাজ্যে আসেন।