প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওআইসি সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে তারা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানে ওআইসি ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আজ শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এখন এমন একটা সময় পার করছে, যখন অতীতের থেকে আরও বেশি যুদ্ধ, সংহাত ও অসহিষ্ণুতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রোহিঙ্গারা আজ জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি। ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না। রোহিঙ্গাদের জন্য ওআইসির একান্ত ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, নিপীড়িত মানবতার জন্য আমাদের মন ও সীমান্ত দুই-ই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। মিয়ানমারের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যথায় ব্যথিত। কারণ, আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্য নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে ছয় বছর দেশে ফিরতে পারিনি, উদ্বাস্তু হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য— ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নে ইসলামিক মূল্যবোধ’।
ওআইসিভুক্ত ৫৭টি দেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলনে (সিএফএম) যোগ দিয়েছেন। এবারের সিএফএম সম্মেলনে সব রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল লিওনিদোভিচ বাগানোভওসহ সংস্থার সদস্যরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।