হাত থেকে হাতি, জামা থেকে টুথব্রাশ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে রয়েছে বহু অদ্ভুত নির্বাচনী প্রতীক। যার যৌক্তিকতা খুঁজতে যাওয়া বৃথা। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে ‘প্যান’। নজিরবিহীন ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গেরই। পঞ্চায়েত ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক পায়খানা থুড়ি ‘পায়খানার প্যান’।
পঞ্চায়েত ভোট বারাবনির স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব দাস। এলাকার উন্নয়নে একাই বাম, ডান, ঘাসফুলের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। ঘটা করে প্রচারে নামার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে বাদ সেধেছে ‘প্যান’। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক হিসেবে তাকে দেয়া হয়েছে এই চিহ্নটিই। আর তা নিয়েই বেজায় বিপাকে পড়েছেন বিপ্লব। সকাল সকাল লোকের সামনে পায়খানার ছবি তুলে ধরলে কী যে হবে তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন তিনি। ‘শেষমেশ পায়খানা’- এমন কটাক্ষ উড়ে আসছে বিভিন্ন দিক থেকে। হাসির খোরাক হয়েও গিয়েছেন ইতোমধ্যে।
তবে প্রার্থীর সমস্যা নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাতে রাজি নয় কমিশন বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিডিও অফিসের পাল্টা যুক্তি, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে স্যানিটারি চিহ্ন দেয়া হয়েছে। এতে সমস্যার কিছু নেই।
বিপ্লব জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট। তাই গাঁয়ের লোকদের টয়লেট চিহ্নে ভোট দিন বললে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলে সবাই কমোডের ছবি ভাবছেন। আবার গ্রামীণ ভাষায় বোঝাতে গেলে ‘পায়খানার প্যান’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। প্রার্থীর মতে দেয়ালে লিফলেটে ‘পায়খানার প্যান’ কথাটি লিখলে বড্ড বেমানান ও অসম্মানের মনে হচ্ছে। ওই শব্দটি উচ্চারণ করলেই হাসির খোরাক হচ্ছেন তিনি।
বিপ্লব দাস বলেন, ছবি এঁকে দেয়ালে শুধু লিখে দেব এই চিহ্নে ভোট দিন। কিন্তু পাড়ার মা মাসিমাদের কাছে কী বলব? রাস্তায় চায়ের দোকান থেকে সব জায়গায় চর্চা আর বিনোদনের খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই প্রতীক চিহ্নটি। তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে একমাত্র বিরোধী বিপ্লব দাস। ভোটের আবেদন করলেই নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে হেসে ফেলছেন শাসকদলের কর্মীরা। আচ্ছা বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। ভোট প্রচারে বেরিয়ে মাঝে মাঝে নিজেই হেসে লুটিয়ে পড়ছেন বিপ্লব। তবে পরিস্থিতির মোকাবেলায় তৈরি তিনি।
‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’কেই হাতিয়ার করে নিয়েছেন তিনি। ভোটারদের বোঝাচ্ছেন দেশজুড়ে টয়লেট নিয়ে বিপ্লব শুরু হয়েছে। সেখানে তার প্রতীক উন্নয়নের, সমাজ সচেতনতার।