সায়েম ফেরদৌস মিতুল ৫ কবিতা
নন্দনব্রত
কানা-গলির মেয়েরা কানা কি না দেখা হয়নি তো, মা
ধুলোখেলার ছলে যা দিয়েছ তা তো অনুৎসবের পাঁতাবাাঁশি
ধরলেও না ধরালেও না, বাজাতেও শেখালে না
রুপনন্দনে জমলে আর্শিবাদ কে করবে তোমার কচ্ছ মুক্ত
শুনেছি বেলারুসে সূর্যোদয় দেখলে পর চোখ শাস্ত্রের উন্নতি হয় আর
বেহিসেবিরা কুমিরসঙ্গবাসে করে পথের শিলান্যাশ
তালো মা রুপ দক্ষ তালুতেই তোলো বন-তুলসি, বেঘোরে না ঘুমিয়ে করক্ষেপে
মুক্তো ফলাও, তোমার দ্বারে পা বুনে আমিও শিখি উরুস্বর্ণ-ঠোঁটের মধু
কলালক্ষীর নাভী খাজে দিতে শিখি বর্ণ-প্রলেপ মা’গো
তবুও যদি দেবেই
শরীর দিলে দাও ভূষণশিল্প জল দিলে দাও জলকন্যা, ওঠাতে দাও সিংহ ভূমে
কোলজে ভরে বিলাস ফসল, নইলে কিন্তু যষ্ণবরাত নিকুচি করে আমি মা মরু গড়বো
রোদে রোদে, বালিতে বালিতে, রোদবালিতে রোদবালিতে…।
আবেদন
মাননীয়া উত্তরা…
দক্ষিণা দিতে এসে ফিরতে হবে, দেবী
পা-এতে ফেনা উঠে গেল অথচ এমন করে দিতেন আর্শিবাদ
এমন করে চুলের ভিতর বিলিকাটা মাথায় রাখা হাত
এমন করে মন্ত্র করে দিতেন জপে আর অমনি হতেম কবি থেকে পুরুষ
ভালোবাসার রামধনু আর খুলে ছিলেন ধনুক থেকে তীরের যত ফলা
শিখিয়ে ছিলেন যজ্ঞ শেষে উতলে ওঠে বর্ণমালা তাদের ছলাকলা
লাগিয়ে দিলেন সমস্ত গায় দূর্বা রঙের সবুজ
তাইতে আমি শিশুর চেয়ে সরল, লোকালয়ে আমিই বোকা, আমি কেবল অবুঝ
কেন তবে ফিরতে হবে, দেবী
লগ্ন শুরুর ভূমিই তো শেকড়ে গেছে পুতে
ঘুরছে কেবল বিষ বিহীন চ্যালা, আমার সকল জঙ্ঘা ফুঁড়ে কেবলই কাঞ্চন
সাতমনিহার, দুধ মাখা চাঁদ, সর খাওয়ার বেলা
এমন পাতের বাড়া থালা ঠেঁলে দিবেন বলেন
আয় দেবী আয় টিটি টিটি, স্বর্গ গড়ি চলেন…..।
ভূত
এসেই চলে গেল
কয়েক লক্ষ পদ্ম ফুটিয়ে সর্ষের ভেতর দিয়ে চলে গেল ভূত, বললো যাই
আর অমনি ভিন্ন ছায়াপথ থেকে খসে পড়লো ছত্রিশখানা তারা, তা থেকে একটির বীজ সংগ্রহ করে বাঁকল ছাড়ানো দেহে রুয়ে দিতেই চোখ ভরে দেখলাম দুরে কেউকারাডঙের চুড়োয় বহুদিনের ফেলে আসা বৃক্ষীটি হয়েছে স্তনবতী
অমরাবতী..
বিশ^াস করো আমি তার দুধ পান করিনি একটুও, আমি তার দীর্ঘিকারের মতো অতলে চুবিয়ে ধরিনি কোন শুড়, শুধু বাঁকল ছাড়ানো দেহটির লেবুঠোঁট চক্ষুআষ্টে আর তন্তুচুল জমিয়েছি, ভেবেছি অঞ্জলী দেবো তাই
অমনি সারা গায়ে নৈশ মেখে স্বপ্নের ঝোলের ভেতর নাভি রেখে চলেগেল
বললো যাই…।
বুলড্রেজার প্রীতি
ভাঙারও একটা শিল্প আছে
যাপিত জীবনে ঠেস দিয়ে বুঝেছি কেবল নির্মান নয়, কেবল আঙুলের উত্তাপে
বীজ জড়ো করলেই বা´বন্দি হয় না অমৃতের দৈত্য
অমরাবতী…
বুলড্রেজার প্রীতিই জম্ম রসায়ন, ভাঙতে ভাঙতে অলক্ষে গড়ে তুললে প্রতœজীব তার প্রতিবিম্বে বৃক্ষলগ্ন হয় গুল্মেরা, সেই সব বৃক্ষের সবুজাভ ছায়া নিয়ে পাখিরা গড়ে সমবায়ী জীবন, শে^তকুষ্ঠহীন ধোয়ামুখ গুলো ত্বক ভরে পান করে ঋতুরন্ধ্রের বাতাস, ঠিক ঐ সময়ই কবিদের পিঠের খোলায় জমা হয় হলুদ ঘিলু তা কি চেঁখে দেখেছে স্তন্যপায়ী মানুষেরা
অথচ ধ্বংস বলছো কেন ধ্বংসতো হয় না কিছুই
পৃথিবীর মুদিতপদ্মচোখে সবিতো নিষ্ঠার চুম্বন, অবশেষে মিলে যায় সকল গানিতিক ফল অবিরল, কেবল ভাঙলেই প্রসারিত হয় শিল্পের দরজা..।
ষোলোই ই জুলাই বিড়ম্বনা
মাত্র এই একটিই, এই এত এত তীর এত তীরন্দাজ এত পাহাড় এত পাহারাবাজ
এত যে সকল শরীর বর্মখানি খুলে দাড়িয়ে অর্চনা শেষে মহাশূন্যে ভেসে বেড়ানো আত্মারেণুর মতো কেবল বৃষ্টিগাছ ও জম্মপত্র হাতে অসংখ্য মহামানব
কেবল পৃথিবীর বার্ষিক গতিতে ষোলোই জুলাই-ই যেন নেই
জগৎভূমে মাংসকণাহীন যত দিন ষোলোই জুলাই যেন তথাধীন
দুর ছাই কেবল ভুলে যাই আর সব মনে পড়ে আর সব মনে থাকে
পুরাতত্ত্ব- প্রতœজীব- প্লটো বিষয়ক পরিকল্পিত পোদ পাকামি- তারকা ও তারকেশ^র-
শুখ আগুন শুভ ছাই- ধোঁয়াদ্বীপে হঠাৎ নবীন অপ্সরা- করতল ভর্তি শঙ্খসরীসৃপ- রাতভোর বীজানু বপন, সব মনে পড়ে সব মনে থাকে
পিতা ও পিতামহের মৃত্যু- পুরোনো চিঠির খামে শুয়োপোকা- প্রেমিকার হাড়- সম্পর্কের সুতো- মানুষের মাধ্যাকর্ষন- আড্ডার টেবিল- সাতই মার্চ- নুর হোসেন- জায়েদাবাদ-কানসাট-আগুন খেয়ে বড় হওয়ার দিন- তা তা ধীন, সব মনে পড়ে সব মনে থাকে
কেবল জখমের মুখ ফেটে অদ্ভুত কষ, প্লেটোর সুদর্শন রাষ্ট্রে আর এক ঝনঝাট
কর্কট আক্রান্ত ষোলোই জুলাই আমার জম্মদিন
মনে থাকেনা, মনে থাকে না, মনে থাকে না।