আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলমান বিক্ষোভ দমনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গ্রেট রিটার্ন মার্চ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর গতকাল শুক্রবারও (৮ জুন, ২০১৮) বিক্ষোভ করেছে ফিলিস্তিনিরা। এদিন ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি সীমান্ত বেষ্টনীর কাছে বিক্ষোভ করতে গিয়ে এদিন আহত হয়েছে ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল নামের রাষ্ট্র। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। এবারের ভূমি দিবসের বিক্ষোভে শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বিক্ষোভ কর্মসূচির জন্য নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে ১৪ মার্চ জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনকে কেন্দ্র করে গাজা উপত্যকায় নেমে আসে রক্তস্রোত। এই একদিনেই গুলি করে … ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। গ্রেট রিটার্ন মার্চ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরও তাই অব্যাহত রয়েছে বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, শুক্রবার বিক্ষোভের সময় রক্তাক্ত হয় পূর্ব গাজা উপত্যকা।গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, সীমান্ত বেষ্টনীর কাছে বিক্ষোভের সময় তিনজনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যাকার খান ইউনিসে হাইথাম আল-জামাল নামে এক ১৫ বছরের কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। খবরে আরও বলা হয়, দক্ষিণ গাজায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জিয়াদ জাদাল্লাহ বুরেইম নামে আরেকজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া গাজার জাবালিয়া শহরের পূর্বদিকে বিক্ষোভের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ইমাদ নাবিল আবু দারাবি নামে আরেক যুবক নিহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, আহত ৬ শতাধিক মানুষের মধ্যে ৯২ জন মারণাস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৬ শিশু ও ১৪ নারী রয়েছে। মারণাস্ত্রের আঘাতে আহতদের বেশিরভাগেরই অবস্থা গুরুতর। বাকিরা আহত হয়েছেন টিয়ার সেলে।
গাজা উপত্যকা থেকে আল জাজিরা প্রতিবেদক ইমরান খান বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। তিনি বলেন, তারা দুইভাবে এটা ব্যবহার করছে। প্রথমত তারা গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের আশ্রয় নেয়। ড্রোন ব্যবহার করে টিয়ারগ্যাস ছড়িয়ে দেওয়ার পর মারণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করে তারা।
বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনি ইমরান জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরাও এসব ড্রোন মোকাবিলার উপায় বের করে ফেলেছে। তারা ঘুড়ির ফাঁদে ড্রোনগুলোকে জড়িয়ে আটকে ফেলতে পারছে। ইতোমধ্যে তারা একটি ড্রোনকে নিচেও নামিয়ে ফেলেছে।