দেশের খবর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকদের’ ব্যানারে ডাকা সমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ।
এসময় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহকে আটক করলেও পরে শাহবাগ থানায় নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাকী বিল্লাহকে প্রিজনভ্যানে একা যেতে দিবে না বলে তার সঙ্গে প্রিজনভ্যানে থানায় যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ। পরে বাকী বিল্লাহর সঙ্গে তিনিও প্রেসক্লাবের সামনে আসেন।
গত তিন দিন ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা হয়। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এসব কর্মকাণ্ড ও এ বিষয়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের ডাক দেন উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকরা।
বিকালে তারা সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। সমাবেশকারীদের দাঁড়াতেই দেয়নি পুলিশ। তাদের নিয়ে আসা ব্যানার কেড়ে নেয় পুলিশ।
এ সময় বাধা দিলে সমাবেশকারীদের মধ্য থেকে বাকী বিল্লাহকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। তাকে ছাড়িয়ে নিতে প্রিজন ভ্যানে ওঠেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। তার সঙ্গেও পুলিশের বাকতিণ্ডা হয়।
এরপরও সমাবেশকারীরা বিক্ষিপ্তভাবে সমাবেশের চেষ্টা করে। পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে তারা সমাবেশ করতে না পারলেও কিছু সময় প্ল্যাকার্ড হাতে প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান চালিয়ে যান।
পরে অধ্যাপক ফাহমিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সমাবেশে এসেছি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করছে পেটুয়া বাহিনী, কখনো ছাত্রবেশে কখনো পুলিশ বেশে। সেটার প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।
‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছে কারণ তারা একটি লক্ষ্য, তাদের একটি ন্যায্য দাবী, ন্যায্য অধিকার কোটা সংস্কারের দাবী জানিয়ে আন্দোলন করছে। এখন এই পর্যায়ে এসে অর্থাৎ সংসদে ঘোষণা দেয়ার পরও মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে কোটা সংস্কার বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট অগ্রগতি আমরা দেখিনি। ফলে শিক্ষার্থীরা যে বার বার মাঠে নেমে ফলাফল চাচ্ছে সেটা তাদের ন্যায্য অধিকার। এ অবস্থায় আমরা শিক্ষক হিসেবে, অভিভাবক হিসেবে বসে থাকতে পারি না।’
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ করতে না দেওয়া ও আটকের বিষয়ে ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক সমাবেশের অনুমতি দিয়ে থাকি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানি ছড়িয়ে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তারা সুনির্দিষ্ট কোন ব্যানারে সমাবেশ করতে আসেনি। তাই তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।