দেশের খবর: শিক্ষার্থীদের সব দাবি যৌক্তিক বলে মনে করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তারা যে দাবি জানিয়েছে, সবগুলোই যৌক্তিক, সবগুলোই পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেব। আমরা কোনোক্রমেই লাইসেন্সবিহীন, রুট পারমিট এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি শহরে চলতে দেব না।
বুধবার (১ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি, বি আর টি এ এর চেয়ারম্যান, মালিক সমিতি এবং পরিবহণ-শ্রমিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজ তিনদিন ধরে ছাত্ররা লাঘাতারতারভাবে বসে আছেন। তাদের সঙ্গে আমরাও দুঃখিত। তাদের যেরকম সহপাঠী নিহত হয়েছেন, আমাদেরও ছেলে-মেয়ে নিহত হয়েছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তারা যে দাবি জানিয়েছে, আমরা যেগুলো পেয়েছি, আমরা মনে করি সবই তাদের যৌক্তিক দাবি। আমরা সবই আমলে নিয়েছি।। সবগুলো দাবি বাস্তবায়নের জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, এর মধ্যে তাদের দাবি দুই একটি যা আমাদের কাছে এসেছিল, ফিটনেসবিহীন গাড়ি যাতে চলাচল করতে না পারে। ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালক যেন গাড়ি না চালাতে পারে তার জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে, আমরা আজকে যারা মিটিংয়ে বসেছিলাম সবাই একমত, যাতে এমন গাড়ি চালাতে না পারে সে ব্যবস্থা আমরা করবো।
‘এ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দেশব্যাপী বাস-ট্রাক টার্মিনালে স্টার্টিং পয়েন্টে এ সমস্থ জিনিসগুলো চেক করবে মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সমিতি। প্রয়োজনে প্রশাসনের লোকও গাড়িগুলো যখন টার্মিনাল থেকে বের হবে তখন চেক করবে, ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ঠিকমত আছে কি না। সেগুলো ফিট হলেই গাড়ি টার্মিনাল থেকে বের হতে পারবে, ফিট না হলে বের হতে পারবে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তায় থাকবেন, যে গাড়িকে সন্দেহ করবে, তাকেই চ্যালেঞ্জ করবেন। যদি কাগজপত্র দেখাতে না পারেন সেখানেই তার ব্যবস্থা নেয়া হবে’, বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, চালকদের সচেতন করার জন্য মালিক সমিতি দায়িত্ব নিয়েছেন। গাড়ি চালকদের সচেতন করার জন্য তারা মাঝেমধ্যে টার্মিনালে যাবেন। আমরা দেখেছি, বিভিন্ন চালকরা অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এগুলো আমরা দেখবো।
এসময় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অবরোধ থেকে সরে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের সহপাঠী নিহত হওয়ায় আমরাও ব্যথিত। তোমাদের দাবি সবই মানা হয়েছে, যারা ঘাতক, অন্যায় করেছে, আইন অনুযায়ী সর্বোচ্ছ শাস্তি তারা যাতে পায়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা আমরা করছি। সারা শহর আজকে অচল হয়ে যাচ্ছে, এটা কারো কাম্য নয়। আমরা মনে করবো, প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা অবরোধ তুলে নেবেন।
তিনি বলেন, অভিবাবক এবং শিক্ষকদেরকে অনুরোধ করবো, আপনারা তাদেরকে অনুরোধ করুন, তারা যাতে ক্লাসে ফিরে আসে। কারণ, এতে জনদূর্ভোগ বাড়ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কোনো ছাত্র-ছাত্রীরা চায় না ভাঙচুর হোক। তাদের কাম্য এটি নয়, তারা জ্বালাও-পোড়াও চায় না কিন্তু একটি স্বার্থনেসী মহল এ সুযোগে ২৯ তারিখে মোট ১৫০ টি গাড়ি, ৩০ তারিখে ২৫ টি এবং ৩১ তারিখে ১৩৪ টিসহ মোট ৩০৯ টি গাড়ি ভাঙা হয়েছে। আর গাড়ি পোড়ানো হয়েছে ৮ টি, এরমধ্যে পুলিশের ৩ টি এবং ফায়ার সার্ভিসের ১ টি গাড়ি। এটি অত্যান্ত দুঃখজনক। এই যে অবরোধ, এই যে সুযোগে স্বার্থনেসী মহল গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়ি পোড়ানোর মত কাজ করছে। আমি সেজন্য অনুরোধ করবো, ছাত্র-ছাত্রীরা অবরোধ তুলে নেবেন। আমরা দোষীদের সর্বোচ্ছ শাস্তি পায় সেজন্য সব ব্যবস্থা নেব।