আমির হোসেন খান চৌধুরী: আজ সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের বার্ষিক সাধারণ সভা। গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত দুই বছর ধরে এই সংস্থাটির বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন করা হচ্ছে কিছুটা লুকোচুরি করে! ১১৪১ জন আজীবন সদস্যের এই ইউনিটের সাধারণ সভা এমন এক জায়গায় আয়োজন করা হচ্ছে যেখানে একসাথে ১০০ জনকেও বসানো সম্ভব নয়! অর্থাৎ সুপরিকল্পিতভাবে সদস্যদের উপস্থিত হতে নিরুৎসাহিত করে সাজানো সাধারণ সভার আয়োজন চলছে! অন্যদিকে ডাকযোগে সকল সদস্যদের নিকট বার্ষিক সাধারণ সভার নোটিশ পাঠানোর কথা থাকলেও শত শত সদস্য কোনদিনই এ নোটিশ পান না। আবার অনেকেউ সভা অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর এ নোটিশ হাতে পান। কোরাম না পুরলেও ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সভার উপস্থিতির কোরাম পূরণ হয়েছে দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শুধু অনিয়ম-দুর্নীতি ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট। এ নিয়ে রেডক্রিসেন্টের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্যরা জানান, বর্তমানে সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে চলছে হরিলুটের খেলা। একজন প্রভাবশালী নেতার দুই ভাই এসব হরিলুটের সাথে জড়িত বলে তারা বলছেন।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলতি সালে সাতক্ষীরা ইউনিটের প্রকল্পের ব্যাপক দুর্নীতির কারণে একরামুল লিটন নামের এক অফিসারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শামীম নামের আরো একজন অফিসারকে ইতোমধ্যে বদলি করা হয়েছে। তবে ঐ দুই ভাইয়ের দুর্নীতির কারণে এ সমস্যা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়নি ওই অফিসাররা।
এদিকে রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের বর্তমান আজীবন সদস্য সংখ্যা প্রায় ১১৪১ জনের মত। অথচ কার্যালয়ে মানুষের জায়গা দেওয়া সম্ভব নয় ১০০ জনেরও।
বিগত ২০১৩ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে সর্বশেষ কমিটি গঠিত হয়। এরপর অদ্যাবদি কোন নির্বাচন হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন বিগত ২০১৫ সালের নির্বাচনে তারিখ নির্ধারণ করা হলেও কোন প্রতিদ্বিন্দ্বী প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেয়নি। যে কারণে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে ঐ দুই ভাইকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। তাদের অন্তর্ভূক্তির পর থেকে ব্যাহত হতে শুরু করে সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যক্রম।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের বার্ষিক সাধারণ সভা। কিন্তু ঐ কার্যালয়ের ধারণ ক্ষমতাই নেই সহ¯্রাধিক সদস্যের। কীভাবে এত সদস্যদের জায়গা দিবেন কর্তৃপক্ষ তা জানেন না কেউ।
এদিকে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে সতক্ষীরা রেডক্রিসেন্টের সেক্রেটারি শেখ নুরুল হককে তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বরে উপর্যুপরি কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি একটি আন্তর্জাতিক সেবাদানকারী সংস্থা। তাই আজীবন সদস্যরা সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটটিকে পূর্বের ন্যায় গতিশীল ও মূল স্রোত ধারায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট