বিদেশের খবর: সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ লোম্বকে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৯০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতের এ ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর ও ভবন। ভূমিকম্পের পর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের পর প্রায় ২৪ বার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। সুনামির আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হলেও এক ঘণ্টা পর তা তুলে নেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সির মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে লোম্বক দ্বীপের প্রধান শহর মাতারাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, এখানকার ভবনগুলোর অধিকাংশই ছিল নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি।
ইন্দোনেশিয়ার জরুরি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের পর পরই গোটা দ্বীপে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাহত হয়।
এর আগে গত ২৯ জুলাই জনপ্রিয় এই দ্বীপে ভূমিকম্প হয়েছিল। সেদিন সকালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। তখন অধিকাংশ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন। সেটির উৎপত্তিস্থল লোম্বক দ্বীপের উত্তরাংশের মাতারাম শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে।
ভূমিকম্পের সময় একটি সম্মেলনে যোগ দিতে লোম্বকে ছিলেন সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শানমুগাম। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ভূকম্পনের কারণে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় অসম্ভব ছিল।
লোম্বকের পাশের বালি দ্বীপে ধারণ করা এক ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি দুলে উঠছে। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে বের হয়ে আসছেন। সেখানকার রাজধানী ডেনপাসারের একজন শ্রমিক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘প্রথমে খুব সামান্য দুলছিল, পরে ধীরে ধীরে সেটি বড় হতে থাকে। তখন লোকজন ভূমিকম্প ভূমিকম্প বলে চিৎকার শুরু করে। তখন আমরা ভয়ে দলবেঁধে ভবন থেকে বেরিয়ে আসি।’
মডেল ও উপস্থাপক ক্রিসি তেইজেন ছুটি কাটাতে তখন বালি দ্বীপে ছিলেন। ঘটনার পর তিনি এক টুইট বার্তায় বেশ কয়েকটি মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার কথা জানান।
লোম্বকের পাশের তিনটি ছোট দ্বীপেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এগুলো ডুবুরিদের কাছে জনপ্রিয়।
ইন্দোনেশিয়ার জরুরি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় সাতশ পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাকে এসব দ্বীপ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই এ ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কারণ, এটি পৃথিবীর রিং অব ফায়ারের ওপর অবস্থিত। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই অঞ্চলটিতে ঘন ঘন ভূকম্পন এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত দেখা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলো এই রিংয়ে রয়েছে।