দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে ফেইসবুকে ‘উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে গ্রেপ্তার কফিশপ মালিক ফারিয়া মাহজবিনকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের এক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম এ কে এম মাইনুদ্দীন শুক্রবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করা ফারিয়া মাহজাবিন (২৮) ধানমণ্ডিতে নার্ডি বিন কফি হাউজ নামে একটা কফিশপ চালান।
বৃহস্পতিবার রাতে হাজারীবাগ থানাধীন হাজী আফসার উদ্দিন রোডের বাসা থেকে ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে শুক্রবার সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফারিয়া ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনকে ‘ভিন্নখাতে প্রবাহিত ও দীর্ঘায়িত করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে’ বিভিন্ন রকম ‘উসকানিমূলক মিথ্যা তথ্য সম্বলিত আডিও ক্লিপ’ ছড়াচ্ছিলেন।
সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও ফারিয়া ও তার ‘সহযোগীরা অন্যায়ভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পরিচালনা এবং রাস্তায় সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করার উদ্দেশ্যে অপতৎপরতা’ চালাচ্ছিলেন বলেও সেখানে অভিযোগ করা হয়।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে র্যাব ফারিয়াকে হাজারীবাগ থানায় সোপর্দ করে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারার মামলা দায়ের করে। সেখানে আরেকজনকে আসামি করে তাকে পলাতক দেখানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মাজেুদুর রহমান বিকালে ফারিয়াকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান। শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় ফারিয়ার পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই মকবুলুর রহমান জানান।
পুলিশের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, “ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের খাবার সরবরাহ, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানিমূলক গুজব ছড়িয়েছেন ফারিয়া মাহজাবিন। তার সঙ্গে আরে কে কে জড়িত ছিল তা জানতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি ।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ব্যবহার করে সরকার হটানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছিল।
ওই আন্দোলনের সময় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে ঢাকার বিভিন্ন থানায় এ নিয়ে মোট নয়টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় সব মিলিয়ে মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মীরাও আছেন।