বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি) পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
শফিউল আলম জানান, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়ার পর আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেয়। কমিটি নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা উঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করে। প্রস্তাবটি অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না। তবে আগের (১৪তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড) তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বহাল থাকবে।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার।
কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। ৮ জুলাই প্রথম সভা করে কমিটি। পরে কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কার্যদিবস (৩ মাস) বাড়ানো হয়।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে এক শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।
এই কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয় আন্দোলনকারীদের। গ্রেফতারও হন আন্দোলনকারী নেতারা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’