রাজনীতির খবর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পদে থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা যাবে না। প্রার্থীর মনোনীত ব্যক্তিরাও এসব পদে থাকতে পারবেন না। নির্বাচনের সময় দলের পদধারীরাও পারবেন না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে থাকতে। নির্বাচনের আগেই তাদের পদত্যাগ করতে হবে।
এসব বিধান যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি সংশোধনের সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশনের আইন সংস্কার কমিটি। আইন সংস্কার কমিটি আরও তিনটি ক্ষেত্রে সংশোধনের সুপারিশ প্রস্তুত করেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। রবিবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য কমিশন সভায় এসব বিধি চূড়ান্ত হতে পারে। ওই দিন বিকাল ৩টায় কমিশন সভা অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
বৈঠকের এজেন্ডা হচ্ছে, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণ বিধিমালা ২০০৮ সংশোধন, স্বতন্ত্র (প্রার্থী সমর্থন যাচাই) প্রার্থী বিধিমালা ২০১১ সংশোধন ও বিদেশি পর্যবেক্ষক বিধিমালা ২০১৮। কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান আচরণ বিধিমালার ৬ এর (১) এর খ দফায় পরিবর্তন আসছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে নির্বাচনি সভার অনুমোদনের বিষয়টি সহজ করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সভার অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে না দেওয়া হলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে গণ্য হবে। অনুমোদন পাওয়ার নিশ্চয়তার জন্য এই প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সংস্কার কমিটি তাদের সুপারিশের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে।
আচরণবিধির ৭ এর উপবিধি ৫ এর পর ৫ (ক) সন্নিবেশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রচারণায় ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিধির ৯ উপবিধির পর ৯ (ক) যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া বিধি ১৪ এর উপবিধি ৪ সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কোনও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কমিটির সদস্য/নেতা/কর্মী, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে আগে সভাপতি বা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বা মনোনীত হয়ে থাকলে বা কোনও মনোনয়ন পেয়ে থাকলে নির্বাচনের আগে তিনি বা তদকর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না।’
এই সংশোধনী প্রস্তাবের যৌক্তিকতায় সংস্কার কমিটি বলেছে- ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। রাজনৈতিক দলের নেতারা সভাপতি বা সদস্য হিসেবে বহাল থাকলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার রোধের জন্য এই সুপারিশ করা হয়েছে।
বিদ্যমান বিধিমালায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে থাকার সুযোগ রয়েছে। তবে তারা নির্বাচনের আগে প্রতিষ্ঠানের কোনও অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতে পারবেন না বা প্রতিষ্ঠানের কোনও কাজে জড়িত হতে পারবেন না বলে বিধান রয়েছে।
আচরণ বিধিমালার সংশোধন প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসির আইন ও বিধিবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘আচরণবিধিতে সামান্য কিছু সংশোধনের সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। কমিশন সভায় এটি উপস্থাপন করা হবে। কমিশন অনুমোদন দিলেই তা চূড়ান্ত হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যান্য নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য করতেই এই সংশোধনী আনা হচ্ছে। তবে এগুলো না হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনও সমস্যা হবে না।
কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, রবিবারের (২১ অক্টোবর) কমিশন সভায় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। তবে কী কী সংশোধনী প্রস্তাব আসছে তা তিনি দেখেননি।
পূর্ববর্তী পোস্ট