বিদেশের খবর: যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম সিএনএন চলতি বছরের ‘সেরা ১০ রিয়েল হিরো’ বাছাই করেছে। পৃথিবী বদলে দেওয়ার মতো কাজ করায় তাদেরকে এই তকমা দিয়েছে গণমাধ্যমটি। তারা প্রত্যেকেই একটি করে পথ বেছে নিয়ে নিজের জ্ঞান ও উৎসাহ দিয়ে অসংখ্য মানুষকে সহযোগিতা করেছেন।
এই বছরের সেরা ১০ সিএনএন হিরোর মধ্যে আছেন একজন ডাক্তার, যিনি সহিংসতার চক্র ভাঙতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পথপ্রদর্শকদের মধ্যে আছেন এক নারী, যিনি বিকলাঙ্গ মানুষদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। একজন শিক্ষক তার লেখনীর মাধ্যমে আশাহীনদেরকে উজ্জীবিত করছেন।
এই ১০ জনের প্রত্যেকেই ১০ হাজার ডলারের ক্যাশ প্রাইজ পাবেন। আর এই ১০ জনের মধ্যে যিনি ‘সিএনএন হিরো অব দ্য ইয়ার’ হবেন, তিনি পাবেন অতিরিক্ত এক লাখ ডলার।
একটি ব্রডকাস্ট টিভি অনুষ্ঠানে তাদের প্রচেষ্টাগুলো তুলে ধরা হবে। স্থানীয় সময় ৯ ডিসেম্বর রবিবার রাত আটটায় ‘সিএনএন হিরোজ: অ্যান অল-স্টার ট্রিবিউট’ নামের এই অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। গত ৬ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে শীর্ষ ১০ সিএনএন হিরোদের নাম-পরিচয় এবং তাদের প্রচেষ্টা সম্পর্কে তুলে ধরে সিএনএন।
আবিসোয়ে আজায়ি-আকিনফোলারিন:
নাইজেরিয়ার লাগোসে মেয়েদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখাতে নিজের চাকরি ছাড়েন আবিসোয়ে আজায়ি-আকিনফোলারিন। এখানে চলতি বছর ফেসবুক ও গুগল তাদের অফিস খুলেছে। ২০১৩ সালে একটি জরিপে বলা হয়, নাইজেরিয়ার ৮ শতাংশেরও কম নারী প্রফেশনাল, ম্যানেজেরিয়াল বা টেকনোলজি জবের সঙ্গে জড়িত। আজায়ি-আকিনফোলারিন এই পরিসংখ্যান পাল্টে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
‘পার্লস আফ্রিকা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি দল আছে তার। দলটি ২০১২ সাল থেকে চার শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী মেয়েদেরকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহযোগিতা করে আসছে, যা তাদের জীবন পাল্টানোর জন্য খুবই অত্যাবশ্যকীয় ছিল। এই ফাউন্ডেশন পরিচালিত ফ্রি গার্লসকোডিং প্রোগ্রাম থেকে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, পাইথন ও স্ক্র্যাচ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ নেয় এসব মেয়েরা। তাদেরকে বিষয়গুলো ভালো করে বোঝানোর জন্য টেক কোম্পানিগুলোতেও নিয়ে যাওয়া হয়। কোম্পানিগুলোতে তাদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করা হয়। এসব মেয়েদের বেশিরভাগই বস্তি, এতিমখানা, সংশোধনাগার থেকে আসা। এমনকি বোকো হারাম জঙ্গি গোষ্ঠীর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা মেয়েরাও অংশ নিয়েছে এই প্রোগ্রামে।
আজায়ি-আকিনফোলারিনের মতে, টেকনোলজি এমন একটি জায়গা, যা পুরুষরা নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা কেন এটা তাদের হাতে ছেড়ে দেব?
মারিয়া রোজ বেল্ডিং:
মারিয়া রোজ বেল্ডিং যুক্তরাষ্ট্রে নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রায় ৪০ শতাংশ খাবার নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণ খেতে না পারা কয়েক লাখ আমেরিকানকে খাওয়াতে চান। তিনি তার সঙ্গে সহমত পোষণকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মিনস’(MEANS) নামের একটি ফ্রি অনলাইন প্ল্যাটফরম খুলেছেন, যেখানে কেউ চাইলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার দান করতে পারে ক্ষুধার্তদের জন্য। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ পাউন্ড খাবার পুনর্বিতরণ করেছে অলাভজনক এই অনলাইন প্ল্যাটফরম।
মারিয়া রোজ বেল্ডিংয়ের মতে, ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা খাবার ক্ষুধার্তদেরকে দান করার মাধ্যমটি সহজ করাই মিনসের লক্ষ্য। আমরা একটি সেতুর মতো, যার অস্তিত্ব আগে ছিল না।
আমান্দা বক্সটেল:
আমান্দা বক্সটেল একটি ভয়ঙ্কর স্কিইং দুর্ঘটনার শিকার হন। ডাক্তাররা বলেন, তিনি আর কখনোই হাঁটতে পারবেন না। কিন্তু তিনি বায়োনিক এক্সোস্কেলিটন স্যুট নামের এক ধরনের মেশিনের সাহায্যে তাদের কথাকে মিথ্যায় পরিণত করেছেন। আর এটিই তাকে ‘ব্রিজিং বায়োনিকস’ তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করে। এই অলাভজনক ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্রের কোলোরাডো অঙ্গরাজ্যের আস্পেন এলাকার আশেপাশের বিকলাঙ্গ মানুষদেরকে সক্রিয় ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে হাই-টেক ফিজিক্যাল থেরাপি দিয়ে থাকে।
ব্রিজিং বায়োনিকসের ফিজিক্যাল থেরাপিস্টরা ক্লায়েন্টদের কাছে গিয়ে তাদের চলাচলের সমস্যার ভিত্তিতে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে থাকেন। ক্লায়েন্টদের মেরুদণ্ডের সমস্যা থেকে শুরু করে অঙ্গ প্রতিস্থাপন, মস্তিষ্কে পক্ষাঘাত ও পার্কিনসনের রোগসহ বিভিন্ন স্নায়ুবিক সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন তারা। ব্রিজিং বায়োনিকস বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছে, যারা আর হাঁটতে পারবে না বলেই জানিয়েছিলেন ডাক্তাররা।
বক্সটেল বলেন, মানুষের নিজের এবং নিজের সম্ভাবনায় বিশ্বাস রাখা দরকার। জীবন শেষ হয়নি। তারা এখনও স্বাভাবিক হতে পারবে।
রব গোর:
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে খুব কাছ থেকেই সহিংসতার পরবর্তী অবস্থা দেখেছেন রব গোর। তিনি ২০০৯ সালে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কিংস এগেইনস্ট ভায়োলেন্স ইনিশিয়েটিভ(কেএভিআই) শুরু করেন। তারা হাইস্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে মেডিটেশন এবং দ্বন্দ্ব নিরসনের উপায় শিক্ষা দিতেন শুরু করেন।
কেএভিআই কিংস ইতোমধ্যে কিংস কাউন্টি হসপিটাল, স্থানীয় স্কুলগুলো এবং বর্ডার কমিউনিটিতে এন্টি-ভায়োলেন্স প্রোগ্রাম চালু করে ২৫০জনের বেশি তরুণকে সহযোগিতা করেছে। তারা অলাভজনকভাবে ‘হসপিটাল রেসপন্ডার্স’ হিসেবে সহিংসতার শিকার এবং তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করে থাকে।
গোরের মতে, সহিংসতা সব জায়গায়…কিন্তু সহিংসতাকারীরা যেন তোমার কাছ থেকে শেখে যে কিভাবে এটা এড়ানো যায়।
লুক মিকেলসন:
যুক্তরাষ্ট্রের ইডাহো অঙ্গরাজ্যের টুইন ফলসে বসবাসকারী লুক মিকেলসন ২০১২ সালে জানতে পারেন তার শহরের অনেক শিশুই বেড না থাকায় মেঝেতে ঘুমায়। এটা জানার পর খুবই মর্মাহত হন তিনি। নিজের টাকায় কাঠ কিনে এসব শিশুকে বেড তৈরি করে দেন। এজন্য তাকে অবশ্য বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের দ্বারস্থ হতে হয়।
পরবর্তী মিকেলসন ‘স্লিপ ইন হ্যাভেন্টলি পিস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠান করেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মেঝেয় ঘোমানো শিশুদেরকে দেড় হাজারেরও বেশি বেড সরবরাহ করেছে। দাতব্য সংস্থাটি বর্তমানে দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে।
মিকেলসনের মতে, এসব শিশু স্বেচ্ছায় এই পরিস্থিতি মেনে নেয়নি। এসব শিশুর জন্য কিছু করার পর তাদের চোখে-মুখে আমি যে আনন্দ দেখেছি, তা আমাকে ব্যতিক্রমী কিছু করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে অনুপ্রাণিত করেছে।
সুসান মুনসে:
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যালিফোর্নিয়ার একটি পতিতালয়ের পতিতা হিসেবে কিশোরী সুসান মুনসে একজন তরুণীর অপব্যবহার হওয়া সরাসরি দেখেন। শেষমেশ তিনি এই জগৎ থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। তিনি ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্কার এবং সাইকোথেরাপিস্ট হিসেবে নতুন জীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে তিনি ‘জেনারেটহোপ’ নামের একটি অলাভজনক দল গড়ে তোলেন, যা যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। দলটি এসব নারীদেরকে দীর্ঘমেয়াদে থাকার জায়গা, থেরাপি, শিক্ষা ও মেডিকেল কেয়ার দেয়।
মুনসে জানান, জেনারেটহোপ এখন শতাধিক নারীর আশ্রয়স্থল, যাদের কয়েকজনের বয়স ১৮। তারা কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিজেদের জীবনের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা থেকে যেন তারা বেরিয়ে আসতে পারে সেজন্য তাদেরকে থেরাপি দেয়া হয়। এখানে একজন নারী দুই বছরের মতো থাকতে পারেন। তাদেরকে আর্ট থেরাপি, নাচ ও যোগব্যায়ামও শোখানো হয়।
তিনি বলেন, আমি ভালো করেই জানি যে আমরা যে খারাপ সময় কাটাই, তার পরিবর্তে গড আমাদেরকে ভালো কিছু দিয়ে থাকে। আমাদের কোনও সময় নষ্ট হয় না।
ফ্লোরেন্স ফিলিপস:
ফ্লোরেন্স ফিলিপস কয়েক বছর ধরে কেনিয়া, গুয়েতেমালা ও জ্যামাইকাতে বিভিন্ন কমিউনিটি-বিল্ডিং প্রজেক্ট এবং ইংরেজি শোখানোর কাজ করেছেন। শেষমেশ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের কার্সন সিটিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। এখান প্রায় ২০ শতাংশ জনগণ অভিবাসী। তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে তিনি উত্তর নেভাদায় ‘ইংলিশ অ্যাজ অ্যা সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ(ইএসএল) নামের একটি অলাভজনক ইন-হোম প্রোগ্রাম শুরু করেন। যেখানে হাইস্কুলের সমমানের শিক্ষা এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে পাঁচ হাজার অভিবাসী এবং তাদের পরিবার উপকৃত হয়েছে।
ফিলিপ বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা এখান থেকে ইংরেজি শিখছে এবং আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছে। আমি গর্ববোধ করি যখন তারা বলে, ‘আই অ্যাম অ্যান আমেরিকান।’
রিকার্ডো পুন-চোং:
ডা. রিকার্ডো পুন-চোং তার জীবনের একটা বড় সময় ধরে পেরুর রাজধানী লিমার বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শনের দায়িত্ব পালন করেছেন। দিনের পর দিন তিনি হাসপাতালে মেঝেয় অসংখ্য পরিবারকে ঘোমাতে দেখেছেন। শহরের ভালো কোনও জায়গায় থাকার অর্থ না থাকায় এবং নিজের বাসা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় হাসপাতালের মেঝেয় রাত কাটায় তারা। অনেক পরিবারের সন্তানদের জীবন যখন শঙ্কার মুখে, তখন তাদের বাবা-মা গৃহহীন। এসব মানুষের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন পুন-চোং।
তার গড়ে তোলে অলাভজনক সংগঠন ‘ইন্সপিরা’। তারা ২০০৮ সাল থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয়দেরকে আশ্রয়, খাবার এবং যথাসম্ভব রোগীকে সহায়তা করে থাকে। সংগঠনটি এ পর্যন্ত নয় শতাধিক পরিবারকে সহযোগিতা করেছে।
পুন-চোং বলেন, আমি যখন এসব শিশুর সঙ্গে থাকি, তখন আমি অনুভব করতে পারি যে তারা কতো দৃঢ় মানসিকতার। আমার মনে হয় এমন কোনও সমস্যা নেই, যা আমরা সমাধান করতে পারি না।
এলেন স্ট্যাকেবল:
শিক্ষিকা হিসেবে এলেন স্ট্যাকেবল যখন তার গ্র্যাজুয়েট স্কুল থিসিস করতে যান, তখন একটি বিষয় জানতে পেরে তিনি খুবই অবাক হন। আর তা হলো আমেরিকায় নারী কারাবন্দির সংখ্যায় শীর্ষে তার নিজের অঙ্গরাজ্য ওকলাহোমা। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন বেশির ভাগ নারীই প্রথমবারের মতো কারাবন্দি হয়েছেন। তাও আবার অসহিংসতামূলক অপরাধের দায়ে। তিনি তাদের কথা শোনেন এবং তাদের জটিল জীবন বোঝার চেষ্টা করেন।
তিনি ২০১৪ সালে এসব কারাবন্দিদের সহযোগিতা করার জন্য অলাভজনক সংগঠন ‘পোয়েটিক জাস্টিস’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সৃজনশীল লেখনী শক্তিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। এসময় ওকলাহোমার পাঁচটি কারাগারের সাপ্তাহিক ক্লাসে নারী কারাবন্দিদেরকে কবিতা ও সৃজনশীল লেখনী এবং মেডিটেশন সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবীরা প্রত্যেকের চিন্তা-ভাবনা জানার চেষ্টা করেন। ক্লাস শেষে এসব নারীরা একে অন্যের সঙ্গে নিজেদের কাজগুলো শেয়ার করতেন। স্ট্যাকেবলের এই দল এ পর্যন্ত আড়াই হাজারেরও বেশি নারীকে তাদের পূর্ববর্তী খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।
তার মতে, আমি দেখতে পাচ্ছি যে এসব নারীরা আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছেন এবং নিজেদের জীবনের মূল্য খুঁজে পেয়েছেন। আমি চাই তারা যেন আশাবাদী হন। তারা যদি আশাবাদী হতে পারেন, তবে তা তাদের জীবন পাল্টে দেবে।
ক্রিস স্টাউট:
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্য ক্রিস স্টাউট যখন আফগানিস্তান থেকে মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের কানসাস সিটিতে ফেরেন, তখন তিনি আহত ছিলেন এবং পোস্ট-ট্রম্যাটিক স্ট্রিস ডিসঅর্ডারে(পিটিএসডি) ভুগছিলেন। যুদ্ধের ময়দানে ঘটনা ও দৃশ্যগুলো তাকে হতাশ করে ফেলেছিল। তিনি গৃহহীন যোদ্ধাদেরকে রাস্তায় বসবাস করতে দেখেন।
তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু ২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে দেন এবং ‘ভেটেরানস কমিউনিটি প্রজেক্ট’ শুরু করেন। তারা এই প্রজেক্টের আওতায় গৃহহীন সৈন্যদের থাকার ব্যবস্থা করতে জানুয়ারিতে ১৩টি ছোট বাড়ি নির্মাণ করেন। আরও ১৩টি বাড়ির নির্মাণ কাজ এই নভেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। এভাবে তারা ইতোমধ্যে আট হাজার সৈন্যকে সহযোগিতা করেছেন। তারা তাদের থাকার জায়গার পাশাপাশি যাতায়াত, চাকরি, আইনি সুবিধা, খাবার সুবিধা, পোশাক ও জরুরি আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে থাকেন।
স্টাউট বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা সবার আগে ‘ইয়েস’ বলি। পরে অন্যকিছু জানার চেষ্টা করি। আমরা তাদের সেবা করি, যারা আমাদের সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হাত উঁচু করে।