- মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষ, লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের ২৫৮, জাতীয় পার্টি ১৭৩ (জোটগত ২৯), জাসদ-ইনু ৭ (জোটগত ৩), ওয়ার্কার্স পার্টি ৫, তরিকত ফেডারেশন ২২ (জোটগত ২), বিকল্পধারা ৩। বিএনপির ২৪২, গণফোরাম ৭, নাগরিক ঐক্য ৪, জাসদ-রব ৪, এলডিপি ৫, কাজী জাফরের জাতীয় পার্টি ২, খেলাফত ২, লেবার পার্টি ১, জমিয়ত ৪, ইসলামী আন্দোলন ২৯৮ প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দ আজ
রাজনীতির খবর: একাদশ জাতীয় সংসদের ভোটযুদ্ধ শুরু হচ্ছে আজ। গতকাল ৩০০ আসনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষ হয়েছে। প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা আজ চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করবেন। এরপর নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রচার-প্রচারণায় আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামবেন প্রার্থীরা। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা আজ থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নামতে পারবেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতীক পেয়েই ভোটের প্রচারে আনুষ্ঠানিকভাবে নামবেন।
এদিকে ৩০০ আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ২৫৮ আসনে নৌকা প্রতীকে ভোট করবেন এবং ১৪-দলীয় জোট শরিকদের ১৬টি আসন ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টিতে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে এবং দুটি জোটের শরিক জেপি বাইসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করবে। এদিকে ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী ২৪১টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন। ঐক্যফ্রন্টকে ১৯টি, বাকি ৪০টি আসনে ২০-দলীয় জোটের শরিকরা ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন। এ ছাড়া দুই আসনের একটিতে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমদ দলীয় প্রতীক ছাতা এবং কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াতের নেতা হামিদুর রহমান আজাদ স্বতন্ত্রভাবে লড়বেন। এখানে ধানের শীষের কোনো প্রার্থী থাকবে না। জাতীয় পার্টি ১৭৩ জনের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৯ আসনে মহাজোটের সঙ্গে ভোট করবে তারা।
দল ও জোট মিলিয়ে ২৭২ জনকে নৌকা প্রতীক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল ও জোট মিলিয়ে ২৭২ জনকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা আছেন ২৫৮ জন। বাকিরা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর। তাদের বাইরে জোট শরিক জেপির দুজন নিজস্ব প্রতীকে ভোট করবেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে যাওয়া জাতীয় পার্টির জন্য ২৬টি আসন ফাঁকা রেখেছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, মহাজোটের শরিক হিসেবে তাদের ২৯টি আসন ছাড়া হয়েছে। গতকাল নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষরে চিঠিতে দলের একক প্রার্থী ও শরিকদের নৌকা প্রতীক দিতে ২৭২ জনের তালিকা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের ২৫৮ জনের পাশাপাশি ওয়ার্কার্স পার্টির পাঁচ, জাসদের তিন, তরিকত ফেডারেশনের দুই, বাংলাদেশ জাসদের এক ও বিকল্পধারার তিনজন নৌকা প্রতীকে ভোট করবেন। জোটের অন্য শরিক জাতীয় পার্টি (জেপি) দুইজন দলীয় প্রতীক ‘বাইসাইকেল’ নিয়ে ভোটে থাকছেন; এই দুই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। এ ছাড়া তরিকত ফেডারেশনের দলীয় প্রতীকে ২০ প্রার্থী রয়েছে। ১৪ দলের শরিক ন্যাপ নিজস্ব প্রতীকে ৯টি আসনে, গণতন্ত্রী পার্টি ৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোট মিলিয়ে ২৯৮ জনের ধানের শীষ প্রতীক : বিএনপি, ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী ২৪১টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন। ঐক্যফ্রন্ট ১৯টি আর বাকি ৪০টি আসনে ২০-দলীয় জোটের শরিকরা ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন। এ ছাড়া দুই আসনের একটিতে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমদ দলীয় প্রতীক ছাতা এবং কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদ স্বতন্ত্রভাবে লড়বেন। এখানে ধানের শীষের কোনো প্রার্থী থাকবে না।
দুই জোটের মধ্যে বৃহৎ শরিক জামায়াতে ইসলামী পেয়েছে ২২টি আসন। জোটের অন্য শরিকদের মধ্যে এলডিপি ৫টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম দুই গ্রুপে ৪টি, খেলাফত মজলিস ২টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর ২টি), কল্যাণ পার্টি ১টি, বিজেপি ১টি, লেবার পার্টি ১টি, এনপিপি ১টি এবং পিপিবি ১টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বে। এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে গণফোরাম ৭টি, নাগরিক ঐক্য ৪টি, জেএসডি ৪টি এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৪টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বে।
জাতীয় পার্টি ১৭৩ জন : জাতীয় পার্টি ১৭৩ জনের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৯ আসনে মহাজোটের সঙ্গে ভোট করবে তারা। বাকি আসনগুলো ‘উন্মুক্ত’ বিবেচনায় তাদের প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে থাকছেন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রার্থীর পরিচয় প্রতীক দিয়ে। যে প্রতীকে ভোট করবেন, তিনি সংশ্লিষ্ট দলের। সে হিসাবে নৌকার প্রার্থী ২৭২ জন। বাকি ২৮টি আসনে জোটগতভাবে ভোট করতে হবে আওয়ামী লীগকে।
নৌকায় তিনজন, মশালে চারজন জাসদের : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের তিনজন নৌকায় ভোট করছেন। পাশাপাশি মশাল প্রতীকে ভোট করছেন চারজন। বাকি বৈধ ৩৭ প্রার্থী রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। গতকাল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু স্বাক্ষরিত তিনটি পত্র নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর দেওয়া হয়। জাসদের এ-সংক্রান্ত চিঠি কমিশনে পৌঁছে দেন সহ-দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন। চিঠিতে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের তিনজন। কুষ্টিয়া-২ আসনে হাসানুল হক ইনু, ফেনী-১ আসনে শিরীন আখতার ও বগুড়া-৪ আসনে এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে নৌকা প্রতীক দিতে বলা হয়েছে। জাসদের প্রতীক মশালে ভোট করবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে শাহ জিকরুল আহমেদ, গাইবান্ধা-৩ আসন থেকে এস এম খাদিমুল ইসলাম খুদি, রংপুর-২ আসন থেকে কুমারেশ চন্দ্র রায় এবং বরিশাল-৬ আসন থেকে মো. মোহসিন। ৪৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক হিসেবে জাসদ ৩৭টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
বাসদের ৪৫ জন একক প্রার্থী : বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান স্বাক্ষরিত ৪৫ আসনে একক প্রার্থিতার তালিকা নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হয়েছে। ৩০০ আসনের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ৭৪ আসন এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮টি আসনে ভোট করছে।