রাজনীতির খবর: স্বাধীনতাবিরোধী নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী তাদের স্বার্থ রক্ষায় একটি মার্কিন লবিস্ট ফার্মকে নিয়োগ দিয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের কোনও নীতি যেন জামায়াতের বিপক্ষে না যায় সেটি নিশ্চিত করার জন্য এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে জামায়াতের পক্ষে লবিস্ট নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও তারা অন্তত দুই দফা লবিস্ট নিয়োগ দিয়ে নিজেদের কৃতকর্ম ঢাকার চেষ্টা করেছে।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক পিস অ্যান্ড জাস্টিস অর্গানাইজেশন (ওপিজে) লবিস্ট প্রতিষ্ঠান হাচ ব্ল্যাকওয়েল স্ট্র্যাটেজিসের (এইচবিএস) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। সে অনুযায়ী এমন কোনও পরিবেশ তৈরি যাতে না হয় যেখানে জামায়াতকে বাংলাদেশে বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঝুঁকি হিসেবে অভিহিত করা হয়, তা রোধ করা।
এ কাজের জন্য হাচ ব্ল্যাকওয়েল স্ট্র্যাটেজিস ঢাকায় একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্ল্যাকওয়েলের নির্বাহী ভাইস চেয়ার গ্রেগ হার্টলে, প্রিন্সিপ্যাল জন এরিয়াল এবং সিনিয়র উপদেষ্টা সিঙ্গেলটন ম্যাকএলিস্টারকে নিয়ে গঠিত টিম জামায়াতের জন্য কাজ করছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী লবিস্ট ফার্ম গত অক্টোবর থেকে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামায়াতের পক্ষে কাজ করবে। এ জন্য তাদের ১ লাখ ৩২ হাজার ডলারসহ অন্যান্য খরচ দিতে হবে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৩০ জুলাইয়ে দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী এইচবিএস ওপিজেকে পেশাগত সেবা প্রদান করবে।’
৩০ জুলাইয়ের ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসে ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রশাসনে যেন উল্লিখিত উদ্দেশ্যগুলো হাসিল করা যায় তার জন্য এইচবিএস ওপিজেকে সঙ্গে নিয়ে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করবে।’
এইচবিএস মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করবে জামায়াত সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনা কী।
লবিস্ট ফার্ম প্রস্তাব করে যে কার্যকরভাবে সেবা প্রদানের জন্য তাদের টিমের দুজন সদস্য একটি ফ্যাক্ট ফাইিন্ডং মিশনে যেন ঢাকা সফর করে।
তবে জামায়াতের লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে অন্তত দুই দফা তারা মার্কিন লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল।
ওপিজে ২০১৪ সালে ক্যাসিডি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয় এবং ওই প্রতিষ্ঠান মার্কিন সরকারের কাছে জমা দেওয়া রিপোর্টে উল্লেখ করেছিল, ‘জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনকারীরা পিস অ্যান্ড জাস্টিস অর্গানাইজেশনের পরিচালক ও কর্মচারীরা এবং তাদের মিশন হচ্ছে দলের ও তাদের কর্মীদের উপকার করা।’
৫০ হাজার ডলারসহ অন্যান্য খরচ বহনের বিনিময়ে জামায়াত তিন মাসের জন্য ক্যাসিডিকে নিয়োগ দিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
ক্যাসিডির ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে নিন্দা জানিয়ে একটি কংগ্রেশনাল রেজুলেশন বের করার কাজ করবো।’
সরকারের নীতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেওয়ার জন্য একটি পশ্চিমা মুখপাত্রকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার জন্য একটি মিডিয়া প্ল্যান তৈরি করার কাজ করেছিল ক্যাসিডি।
জামায়াত একই বছর কেগ্লোবাল নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছিল।