দেশের খবর: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির আমলে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ওই সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দুর্নীতির সূচক নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, তা সঠিক ও যথার্থ ছিল।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশে দুর্নীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। কাজেই টিআইবির এখনকার প্রতিবেদনগুলো মনগড়া। আমরা এগুলো প্রত্যাখ্যান করছি।’
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
বিভিন্ন দেশের দুর্নীতির বিষয়ে টিআইবি গতকাল মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির ধারণা সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তালিকার নিম্নক্রম অনুযায়ী ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১৩তম। যা ২০১৭ সালের তুলনায় চার ধাপ নিচে এবং ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী ১৪৯তম; যা ২০১৭ সালের তুলনায় ছয় ধাপ অবনতি হয়েছে। ওই বছর এ ক্রমমান ছিল ১৪৩তম।’ তিনি বলেন, ‘১০০-এর মধ্যে ৪৩ স্কোরকে গড় স্কোর হিসেবে বিবেচনায় বাংলাদেশের ২০১৮ সালের স্কোর ২৬ হয়েছে। এই হিসেবে বলা যায়, দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনো উদ্বেগজনক।’
টিআইবির এ প্রতিবেদনের বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘টিআইবি মূলত বিরোধী দলের হাতে একটি অস্ত্র তুলে দেওয়ার জন্য মনগড়া এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের এ প্রতিবেদন প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। তাদের নিজেরাই ট্রান্সপারেন্ট নয়। তারা মূলত বিদেশি ফান্ডের জন্যই এগুলো করে থাকে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন দুর্নীতিমুক্ত হয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে এগিয়ে যাচ্ছে, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করছে, তখন টিআইবির এ প্রতিবেদন জাতিকে হতবাক করেছে। টিআইবির এ প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ বিরোধী দলের ইস্যু বানানোর জন্যই টিআইবি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
‘বিএনপির আমলেও টিআইবি এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর আপনারা তা লুফে নিয়ে দুর্নীতিবরোধী আন্দোলন করেছেন এবং সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আপনাদের দৃষ্টিতে ওই সময়ের প্রতিবেদন সঠিক হলে এখনকারগুলোকে আপনারা প্রত্যাখ্যান করছেন কেন?’
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপির আমলে দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ওই সময় দুর্নীতি হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানও কালো টাকা সাদা করেছেন। ওই সময়ের দুর্নীতি ছিল সর্বজনস্বীকৃত। বর্তমানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি দমনে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের সৎ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রমাণ হয়নি। কাজেই টিআইবি এখন দুর্নীতির সূচক নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’