দেশের খবর: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৩৩ মামলায় পাটকল শ্রমিক জাহালমের ৩৮৪ বছর কারাদণ্ড হয়েছিল। পাঁচ বছর আগে সোনালী ব্যাংকের ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আবু সালেক নামে একজনের নামে ৩৩টি মামলা করে দুদক। ওইসব মামলায় ‘ভুল’ আসামি হিসেবে জাহালমকে গ্রেফতার ও ৩ বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি।
জাহালম বলেন, ‘দুদক কর্মকর্তাদের বারবার বলার পরও তারা আমার কোনও কথাই শোনেনি। ওই সময় আমাকে মারধরও করা হয়। দুদকের ভুলের কারণে আমাকে ৩৮৪ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর আমি তিন বছর কারাগারে ছিলাম। দুদক আমার জীবন থেকে তিনটি বছর কেড়ে নিয়েছে। মিথ্যে মামলায় জেলে প্রতিটি দিন ছিল আমার জন্য ছিল অসহনীয়। অন্যদের কাজকর্ম করে দিতে হতো জেলখানায়। কখনও ভাবিনি এই মিথ্যে মামলার জট খুলবে। মিডিয়া আসল তথ্য প্রকাশ করে আমাকে মুক্ত করায় মিডিয়ার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও বলেন, আমিও চাই প্রকৃত দোষির শাস্তি হোক। তবে আমার মতো নিরাপরাধ ব্যক্তিকে যেন না ফাঁসাতে পারে সেজন্য দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচার দাবী করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাহালমকে দুদকে হাজির হতে বলা হয় দুদকের দেয়া চিঠিতে। জাহালম সেসময় নরসিংদীর ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন। যথা সময়ে দুদকে হাজিরা দিয়ে জাহালম আবার তার নরসিংদীর জুট মিলের কর্মস্থলে চলে যান। এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর ঘোড়াশালের ওই জুট মিল থেকে জাহালমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে টাঙ্গাইলের আদালতে তাকে তোলা হলে জেলখানায় পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। ৭ দিন টাঙ্গাইল কারাগারে রাখার পর তাকে কাশিমপুর-২ কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর থেকে সে তিনবছর সেখানে কারাবন্দি ছিলেন।
বিভিন্ন মিডিয়াতে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আদালতের নজরে আসে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুক্ত হন তিনি।