জি.এম আবুল হোসাইন: সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাধবকাটি বাজার, ছয়ঘরিয়া, চুপড়িয়া, বলাডাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বেপরোয়াভাবে চলছে মাটিবাহী ট্রাক্টরের দৌরাত্ম। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা ও নানাবিধ অসুবিধা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ছয়ঘরিয়া গ্রামের আলতাফ সরদারের একমাত্র প্রত্র মো. সুজন সরদার (২২) ছয়ঘরিয়া মোড়ে নিজের ট্রলির চাঁপায় নিহত হয়েছে। মাটিভর্তি ট্রাক্টর পিছন থেকে চলন্ত ট্রলিতে ধাক্কা দিলে ট্রলির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক গুরতর আহত হয়। স্থানীয়া তাকে উদ্ধার করে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় খুলনা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গত এক বছরে মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলির পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নারীসহ ৬ জনের। এছাড়া আহত হয়েছে শতাধিক পথযাত্রী। এদিকে এসব ট্রাক্টর ও ট্রলি চালানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে শিশুরা। যার ফলে সামান্য কিছু টাকার লোভে অদক্ষ ও শিশুরা এসব যন্ত্র হরহামেশাই চালিয়ে বেড়াচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতক্ষদর্শী জানান, সদর উপজেলার মাধবকাটি, ছয়ঘরিয়া, বলাডাঙ্গা, চুপড়িয়া,পাঁচরখি, রেউই, রামেরডাঙ্গা সহ বিভিন্ন মাঠ থেকে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে মাটি ও বালি নিয়ে মাধবকাটি বাজারের প্রধান সড়ক দিয়ে স্থানীয় নীট ব্রিকস্, ঠিকানা ব্রিকস্, আহসান উল্লাহ ব্রিকস্, সনি ব্রিকস্, স্টার ব্রিকস্ সহ একাধিক ইট ভাঁটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন চলছে কয়েক শত মাটিবাহী এসব অবৈধ ও লাইসেন্সবিহীন মরণযন্ত্র। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় তাদের দৌরাত্ম ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ফলে নিরাপদে স্কুলে যেতে পারছেনা সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধবকাটি আল-আমিন মহিলা মাদ্রাসা, পঞ্চগ্রাম প্রি-ক্যাডেট স্কুল, সুরাইয়া সুলতানা ইরানী এতিমখানা, ঝাউডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ঝাউডাঙ্গা কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। যে এছাড়াও বৈধ ও অবৈধ ইজিবাইক চালানোর কাজে জড়িয়ে পড়ছে ১০ থেকে ১৬ বছরের শিশুরা। এছাড়াও রয়েছে মাদকাসক্ত কিছু চালক। লাইসেন্স বিহীন চালকদের বেপরোয়া চলাচলে নিত্যদিনে ঘটছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। কিছুদিন আগে সাতক্ষীরা যশোর মহাসড়কের বলাডাঙ্গার আহসান উল্লাহ ব্রিকস্ এর সামনে সড়ক দূর্টনায় ৫-৬ নিহত ও একাধিক যাত্রী আহত হয়। আর এসব অবৈধ যন্ত্র চলাচলে সহযোগিতা করে আসছে এলাকার কিছু অসাধু ও প্রভাবশালী লোকজন। এপ্রসঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের নাট্যকার ও কবি ডা. মো. সামছুজ্জামান বলেন, মাটিভর্তি এসব দ্রুতগামী ট্রাক্টর ও ট্রলি চলাচল জরুরি ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তা না হলে অকারণে প্রাণ হারাচ্ছে শিশুসহ শতশত নিরীহ পথযাত্রী। মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলি চলাচল বন্ধে সমাজের দায়িত্বশীল মানুষ ও প্রশাসন এগিয়ে না এলে এই দুর্ভোগ আরো প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন এলাকাবাসী।
পূর্ববর্তী পোস্ট