দেশের খবর: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমনের দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের হতাশা বিশাল।’ তিনি বলেন, ‘হোয়াংহোকে চীনের দুঃখ বলা হতো, আজকের বাংলাদেশের প্রধান দুঃখ দুর্নীতি।’
আজ সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে দুদক।
সভায় দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জানিয়েছেন, শুধু কৌশলের কারণে ব্যাংকিং খাতে পাচার হওয়া কোটি কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে দুদক।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে মামলার কারণে এবং চার্জশিট না হওয়ার কারণে না হলেও তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা নগদ জমা পড়েছে ব্যাংকে। ভয়ে। আসামি যারা, তারা বলে চার্জশিট দেন না কেন? চার্জশিট দিয়ে দেন। অর্থাৎ আমাদের কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যান। আপনার কাছে থাকলে আমাদের সমস্যা। আপনার কাছে থাকলে আমাদের টাকার ব্যবস্থা করতে হয়। টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়।’
দুদকের চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আমরা কেউই ধোয়া তুলসি পাতা নই। আমরা এ সমাজের অংশ। তবে আপনাদেরকে চিন্তা করতে হবে আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে কি না? আমরা আমাদের ভুলটা স্বীকার করি কি না? অকমর্ন্যতা স্বীকার করি কি না। আমাদের দুর্বলতা স্বীকার করি কি না? আমার মনে হয় আমরা সেটা স্বীকার করি না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন অনেক কাজ করছে। কিন্তু ভাবমূর্তিটা সঠিক আছে বলে মনে করি না।’
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি এবং দুদক আইনকে শক্তিশালী করে কীভাবে বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজকে ধরা যায় সে বিষয়ে জোরালো ভুমিকার পরামর্শ দেয় সুশীল সমাজ।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘এখন মনে হচ্ছে শিক্ষাটা পয়সার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনে সীমাবদ্ধতা আছে। আপনাদের অগাধ সম্পদ নাই। আপনাদের বিরাট জনবলও নাই।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি কমিশনকে তা প্রতিরোধে পরামর্শ দেন।
সেন্টার ফর পলিসির (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচিত দুর্নীতিবান ব্যক্তিরা যদি স্বাচ্ছন্দ্যে ক্ষমতার বলয়ে দৃশ্যমান থাকেন আর আমি নিম্ন পর্যায়ে দুর্নীতিকে দৃষ্টান্তমূলভাবে অবলোকন করব- এটা অবাস্তব চিন্তা।’
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনকেও আইনের মধ্যে চলতে হবে। সুতরাং এ জায়গাটায় যদি আইডেন্টিফাই করা যায় যে এই এই আইন আরো শক্তিশালী করা দরকার তাহলে আমার মনে হয় আপনাদের কার্যক্রম শক্তিশালী হবে।’