বিদেশের খবর: সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে এবং দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে দেশটির সরকারি সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির এক প্রাদেশিক মন্ত্রীও এমনটি জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থাটির।
উত্তর দারফুরের উৎপাদন ও অর্থনীতি মন্ত্রী আদেল মাহজুব হুসেইন দুবাইভিত্তিক আল হাদাত টেলিভিশনকে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট বাশারকে সরানোর পর ক্ষমতা অর্পণের জন্য একটি সামরিক পরিষদ গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।”
রয়টার্স জানিয়েছে, সুদানের সূত্রগুলো আল হাদাতের প্রতিবেদনকে সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন।
বাশার ‘কড়া পাহারার মধ্যে’ প্রেসিডেন্টের বাসভবনে আছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তারা।
সামরিক বাহিনী শিগগিরই একটি ঘোষণা দিবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। রাজধানী খার্তুমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ঘোষণায় বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে শুধু বলা হয়, “অল্পক্ষণের মধ্যেই সশস্ত্র বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ একটি বিবৃতি দিবে। এর জন্য প্রস্তুত থাকুন।”
রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদিক জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করতে থাকায় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী মন্ত্রণালয়টির চারদিকে এবং প্রধান সড়ক ও সেতুগুলোতে সেনা মোতায়েন করেছে।
খার্তুমের হাজার হাজার বাসিন্দা রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়ে নেচে, গেয়ে বশির বিরোধী শ্লোগান দিচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হওয়া প্রতিবাদকারীরা, ‘সরকারের পতন হয়েছে, আমরা জিতেছি’ বলে শ্লোগান দিচ্ছে।
সেনা সদরদপ্তরের পাশে অবস্থান নেওয়া এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, “আমরা বড় খবরের অপেক্ষায় আছি। সেটি কী না জানা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে নড়বো না। তবে বশিরকে যে যেতে হবে এটি আমরা জানি।”
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত সম্প্রচার করা হচ্ছে।
১৯৮৯ সাল থেকে গত ৩০ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন বশির।
কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছিল। তিন দশকের ক্ষমতার মেয়াদে প্রেসিডেন্ট বশির এই প্রথম বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন।
চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে সৈন্যরা গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীর উর্দি পরা সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রাজধানী খার্তুমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টাকালে সেনা সদস্যরা তাদের বাধা দেয়।
মঙ্গলবারের ওই সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হন যাদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছয় জন।