নিজস্ব প্রতিবেদক: নানা অভিযোগে মানববন্ধনের ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেবহাটার সরকারি খানবাহাদুর আহছানউল্লা (কেবিএ) কলেজের অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের পাল্টা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফয়জুল্লাহ।
কলেজে মানববন্ধনে তার বিরুদ্ধে উপস্থাপিত যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় পারুলিয়াস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, প্রকৃতপক্ষে কলেজটির অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম কলেজের বিভিন্ন দুর্নীতি-অনিয়মের সাথে জড়িত।
এসকল বিষয়ে প্রতিবাদ সহ চলমান দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার সহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সময়ে কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিকের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়, নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায়, পরীক্ষার ফরম ফিল আপের নামের বোর্ড নির্ধারিতের চেয়ে দ্বিগুন টাকা আদায় সহ কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ ও ফল বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
এসকল বিষয়ে কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে সোমবার অধ্যক্ষের অফিসে উপস্থিত হয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ অন্যান্য দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তথা বর্তমান সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের অপচেষ্টা হিসেবে ভিত্তিহীন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনটি করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনকালে দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান সোহাগ, পারুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব হোসেন, কেবিএ কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারন সম্পাদক আল হাসিব ইফতি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবু রায়হান সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষকে প্রথমে ‘আংকেল’ ও পরে তুই-তোকারি করার অভিযোগ:
এদিকে, সরকারি খান বাহাদুর আহছানউল্লা কলেজের অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ফয়েজউল্লাহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনার্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে আমাদের ছাত্র। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ ফয়েজউল্লাহ আমার রুমে এসে বলে, ‘আংকেল আপনারা স্টুডেন্টদের কাছ থেকে ৮০ টাকা করে নিচ্ছেন কেন?’ তখন আমি বলি, এটা তোমাদের ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার বলতে পারবেন। তার কাছে জিজ্ঞেস করো। আমি একটু অন্য কাজে ব্যস্ত। তখন সে বলে, ‘এই তুই জানিস না কেন?’ তখন আমি তাকে আমার রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলি। ঘটনার সময় আরও দুজন শিক্ষক আমার কক্ষে ছিলেন।
কলেজ অধ্যক্ষ আরও বলেন, আমার ৩৪ বছরের শিক্ষাকতার জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার পর তার বলা কথাগুলো শিক্ষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষকরা প্রতিবাদ শুরু করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মানববন্ধন করে প্রতিবাদ ও কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী ডা. আ.ফ.ম রুহুল হককেও জানানো হবে। এর একটা সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্ত হব না।
তিনি আরও বলেন, এই ছেলের বিরুদ্ধে ইভটিজিং, গাঁজা সেবন, চাঁদাবাজি, উশৃঙ্খলতার অভিযোগ প্রতিদিনের ঘটনা। তবে তাকে আমরা বুঝাই। অল্প বয়স হয়তো সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু দিন দিন তার আচরণ আরও খারাপের দিকে গেছে। আমরা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাই।