দেশের খবর: বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর ছেলে সুনাম দেবনাথ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সবাই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হলেও শম্ভু ও দেলোয়ার পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক সাপে নেউলে। তবে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফের খুনিদের পক্ষ নিয়েছে দুটি পরিবার। এ কারণেই প্রকাশ্যে খুনের পরও এখনো ঘাতকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
গত বুধবার সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বর্ণনায়ও ঘাতকদের নাম আসে।
বরগুনা পুলিশ লাইন এলাকার মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের মেয়ে মিন্নির সঙ্গে মাস দুয়েক আগে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামের আব্দুল হালিম দুলাল শরীফের ছেলে রিফাত শরীফের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কলেজ এলাকার সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড মিন্নিকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। রিফাত এর প্রতিবাদ করলে নয়নের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে স্ত্রীর সামনে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন ও তার সহযোগীরা।
খুনের মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন স্থানীয় লোকজনের কাছে নয়ন বন্ড হিসেবেই পরিচিত। জেমস বন্ডের ০০৭ ছবি দেখে নিজের নামের পরে বন্ড শব্দটি যুক্ত করে। তার জীবনের কালো অধ্যায়ের শুরুটা মারামারি দিয়ে, তাও হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে। ২০১১ সালের ১৭ জুলাই সেই ঘটনার পর নয়ন একটুও দমেনি। উল্টো ওই ঘটনার পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ওই ঘটনার ঠিক এক মাস পর ১৮ আগস্ট আবারও আরেকজনকে হত্যার চেষ্টা চালায় সে। এই দুটি ঘটনায় থানায় হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর নয়নের নাম আলোচনায় উঠে আসে। রাজনৈতিক নেতাদেরও দৃষ্টি পড়ে তার ওপর।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, অস্ত্র, মাদক, চুরি আর মারামারির ঘটনায় বরগুনায় সদর থানায় নয়নের বিরুদ্ধে আটটি মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে ২০১৭ সালেই অস্ত্র-মাদকসহ তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ওই তিনটি মামলার পর দীর্ঘ দুই বছরে আর কোনো মামলা দায়ের হয়নি। কারণ হিসেবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র বলছে, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকার কারণে পুলিশ নয়নকে গ্রেপ্তার করেনি। তা ছাড়া ওই সময় থেকেই নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করত বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, নয়নের সঙ্গে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এর আগে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছিল সুনাম মাদক কারবারি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। যেহেতু নয়ন মাদক কারবারি, তাই সুনামের সঙ্গে তার যোগসূত্রের কথা খোদ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাই বলছেন। তাঁরা বলছেন, রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় না থাকলে এত বড় অঘটন ঘটানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া একাধিক মামলার আসামি প্রকাশ্যে আসতেও পারে না।
এ প্রসঙ্গে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘নয়ন সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কলেজ রোডের একাধিক বাসিন্দা মৌখিক অভিযোগ করেছিল। আমি প্রতিবাদ করিনি। কারণ প্রতিবাদ করলে নিজদলীয় নেতাদের রাজনীতির শিকার হব। তা ছাড়া নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করত বলে শুনেছি। পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অপরাধ করায় কেউ তাকে দাবাতে পারেনি।’ কোনো রাজনীতিবিদ ঘটনায় জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সময় এলেই বলব।’
রিফাত শরীফ খুনের পর থেকেই সুনাম দেবনাথ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবির পাশাপাশি রিফাত ফরাজী ও তাঁর ভাই রিশান ফরাজীর শাস্তি দাবি করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে ইঙ্গিত করে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে পোস্টও দিয়েছেন। তবে সেই পোস্টে নয়নের ব্যাপারে কিছুই লেখেননি। শুধু তা-ই নয়, সুনাম দেবনাথ ঘটনার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আত্মীয়কে দায়ী করে বিভিন্ন মিডিয়াতে বক্তব্যও দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সুমন দেবনাথ বলেন, ‘নয়নের নেতৃত্বে রিফাত ও তার ভাই রিশান বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। সম্প্রতি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় রিফাত ঘটা করে জন্মদিন পালন করেছে। তার মানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে তাদের পারিবারিকভাবে যোগাযোগ রয়েছে। মূলত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রভাবেই তারা অনেকটাই বেপরোয়া। রাজনীতিক দলের ব্যানারে তারা এই অপকর্ম করলেও আমি বাধা দেইনি। কারণ তারা এটাকে রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতা করবে।’
বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ‘নয়ন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, মারামারি আর চুরির ঘটনায় আটটি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নয়ন পুলিশের সোর্স নয়। তবে নয়ন যেহেতু মাদক কারবারি, তাই কারবার চালিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেকে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিতেও পারে।’
রিফাত হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজী। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে তারা। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি হলেও পুলিশ তাদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। রিফাতের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় অন্তত চারটি মামলা রয়েছে। বরগুনা সরকারি কলেজে বখাটেপনার দায়ে পুলিশ তাকে দুইবার আটক করেছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা না দেওয়ায় পুলিশ মুচলেকা রেখে রিফাতকে ছেড়ে দেয়। সম্প্রতি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় রিফাত ঘটা করে জন্মদিন পালন করে।
বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি ২০১৪ সালের জুলাইতে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়েছি। এ সময়ে ক্লাস চলাকালে রিফাত অন্তত দুইবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিল। তাই রিফাতকে পুলিশে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেইনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুনেছি নয়নের বাসা ক্যাম্পাসের পাশেই। তবে আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না।’
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রিফাত ও রিশান আমার আত্মীয়। তারা চিহ্নিত বখাটে। তাদের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবেই কোনো সম্পর্ক নেই।’ ডাকবাংলোয় রিফাতের জন্মদিন পালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে অবগত নই।’
দেলোয়ার দাবি করেন, ‘রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। এর আগে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছিল। আমি রিফাত শরীফ খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। একই সঙ্গে রিফাত ও রিশানের শাস্তি দাবি করছি।’
০০৭ গোপন গ্রুপ : নয়ন সিনেমার নায়ক জেমস বন্ডের নামে শেষ অংশটি নিজের নামে জুড়ে দেয়। সহযোগীরা তাকে ডাকা শুরু করে ‘নয়ন বন্ড’ নামে। এ ছাড়া নয়ন জেমস বন্ডের কোড জিরো জিরো সেভেন (০০৭) নাম নিয়ে একটি গোপন ‘বাহিনী’ গড়ে তুলেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ ‘বাহিনীর’ সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই গোপন গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে আলোচনা করত। ওই গ্রুপে রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীও রয়েছে। গতকাল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি সড়কে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মূল ফটক ও বাসার দরজা তালাবদ্ধ।
বুধবার সকালে রিফাত শরীফকে হত্যার আগের রাতে নয়ন ওই গ্রুপে হত্যার বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পনা করে মেসেঞ্জারে অন্যদের জানায়। এরপর রিফাত ফরাজী মেসেঞ্জারে লেখে, ‘পারলে হেইডা সহ’। এর কিছুক্ষণ পর একটি দার ছবি আপলোড করা হয়। মাহমুদ নামের একজন ‘দা নিয়ে আমু হানে’ বলে মন্তব্য করে। পুরো বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের নজরে রয়েছে। তারা সে বিষয়গুলো নিয়েই তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
মিন্নিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা : রিফাত শরীফকে খুনের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা গেছে, তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ঘাতকদের ঠেকানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। একজনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলে আরেকজন এসে স্বামীকে কোপাচ্ছে। কোনোভাবেই ঘাতকদের আটকাতে পারছিলেন না তিনি। স্বামীকে বাঁচাতে বারবার চিৎকার করে লোকজনকে ডাকলেও কেউ এগিয়ে যায়নি। শত শত মানুষের সামনে ঘাতকরা রিফাত শরীফকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গত এপ্রিলে ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে মাদরাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ঘটনাটিকে যেমন আত্মহত্যার চেষ্টা বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল একটি মহল তেমনি রিফাত খুনের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মিন্নিকে দোষারোপ করার চেষ্টা চলছে।
রিফাত শরীফ খুনের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সুমন দেবনাথ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস, পোস্ট ও ছবি প্রকাশ করেছেন। একটি পোস্টে তিনি রিফাত হত্যায় স্ত্রী মিন্নিকে ‘মূল ভিলেন’ হিসেবে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বিভিন্ন খবর ও মিডিয়াতে যাকে এখন হিরো বানানো হচ্ছে মূল ভিলেন সে নিজেও হতে পারে, রিফাত শরীফের বন্ধুদের থেকে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তাতে এটাই বোঝা যায়।’
এ ব্যাপারে সুমনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ঘটনার পর রিফাতকে নিয়ে হাসপাতাল যাওয়া বা নয়নের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একটি মহল নানা কথা বলছে। বৃহস্পতিবার খুনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মিন্নি বলেছেন, বিয়ের পর নয়ন তাঁকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। এমনকি বিষয়টি পরিবারকে জানাতে নিষেধ করে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন। রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নয়ন নামের এক যুবক তাঁর ছেলের বউকে নিয়ে ফেসবুকে আজেবাজে কথা লিখছে।মিন্নি বলেন, ‘রক্তাক্ত অবস্থায় আমি রিকশায় করে রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। রিফাতের বন্ধু মনজুরুল আলম জন ঘটনার পরপরই হাসপাতালে ছুটে আসেন। আমি তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে দেখি রিফাত আমার পাশে নেই। তাকে আমার বাবাই বরিশালে নিয়ে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিকেলে স্বামীর লাশ দেখতে শ্বশুরবাড়ি যাই। তখন জনের কয়েকজন বন্ধু আমাকে উদ্দেশ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার দিকে তেড়ে আসে। একপর্যায়ে আমি আমার চাচাশ্বশুরের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেই। আমার অগোচরেই রিফাতের দাফন সম্পন্ন হয়। আমি শেষ দেখাটাও দেখতে পারিনি। এমনকি আমাকে ওর কবরে মাটি পর্যন্ত দিতে দেয়নি।’মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘রিফাত বেকার ছিল। প্রথমে আমরা বিয়েতে রাজি ছিলাম না। আমার ভাই সালেহ ও রিফাতের বাবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল পারিবারিকভাবেই ওদের বিয়ে হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘মিন্নিকে তার শ্বশুরবাড়ির সবাই ভালবাসত। ও যেভাবে রিফাতকে সেভ করছিল, তা দেখেও কেউ কেউ বাজে মন্তব্য করছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক।’