দেশের খবর: পদ্মা সেতু প্রকল্পে মূল সেতুর ৮১ ভাগ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আর মাত্র ১৯ ভাগ কাজ বাকি আছে। তবে, পিছিয়ে রয়েছে নদী শাসনের কাজ। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ। রবিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রতিবেদনটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে, কমিটির আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সদস্যরা চলমান সংসদ অধিবেশন শেষে সরেজমিনে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যাবেন বলে বৈঠকে আলোচনা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২৫৬টি এবং ৪২টি পিয়ার কলামের মধ্যে ২৯টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ৩০ জুন ১৪তম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭১ ভাগ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে আরও জানানো হয়েছে, এই বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের জাজিরা ও মাওয়ার সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এরিয়া-২ এর নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর উভয় পাড়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৭টি গাছ লাগানো হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটি জাদুঘর স্থাপনের কাজ চলমান আছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে গত জুন পর্যন্ত ৬৪১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা বাবদ বিতরণ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে পুনর্বাসন এলাকায় নির্মিত ২ হাজার ৬৯০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৯৭টি ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে প্লট দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণাধীন উড়াল সেতুর কাজ ২০২২ সালের মার্চ নাগাদ শেষ হবে। এ সংক্রান্ত অগ্রগতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়াল সেতুর ১৪৭টি স্প্যানে আই গার্ডার বসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার বলেন, ‘সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ, বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও উড়াল সেতুর কাজ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়ার জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছে।’
প্রথম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, ওই বৈঠকে সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন। আগামী ২০২০ সালের ডিসেম্বর বা ২০২১ সালের এপ্রিলে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব বলে সচিব আশা প্রকাশ করেন।