আসাদুজ্জামান : কেউ দিনমজুর, কেউবা রংমিস্ত্রী, আবার কেউবা ফেরিওয়ালা ও চা বিক্রেতা তারা সবাই ছোটÑখাটো কর্ম নিয়ে পেটের তাগিদে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব অসহায় ও অস্বচ্ছল গরীব মানুষেরা মাথা গোজাঁর ঠাই হিসেবে যাতায়াতের পথ দেখেই কিনেছিলেন এক খন্ড করে জমি। নিচু জায়গা কিনে মাটি ভরাট করে সেখানে গৃহ নির্মানের মাধ্যমে বিগত প্রায় ১৮ বছর ধরে বসবাস করছিলেন ১১টি পরিবার। এসব পরিবারের সদস্য সংখ্যা শতাধিকের উপর। সম্প্রতি ঐ জমি বিক্রেতাদের এক শরীক ১১ পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথের মুখ বন্ধ করতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয় এসব নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার চালিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে।
মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ওমরাপাড়া গ্রামের কয়েকজন ভুক্তভোগী এসব অভিযোগ করেন।
প্রেসক্লাবে হাজির হওয়া ওমরাপাড়া গ্রামের জাফর আলীর স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৪৫), আতোষ আলীর স্ত্রী নবীরন (৫৫), মৃত ঝড়– কারিকরের পুত্র সাবের আলী (৬০), আব্দুল বারেকের পুত্র দেলোয়ার হোসেন (৩২), জমাত আলীর পুত্র তাজউদ্দীন আহম্মদ (৪৫), শুকুর আলীর স্ত্রী ছফুরা খাতুন (৫৮), সাবের আলীর পুত্র শরিফুল ইসলাম (৩০) ও আজিত কারিকরের স্ত্রী নাছিমা খাতুন (৩৫) জানান, একই গ্রামের তায়জুদ্দীন গাজীর পুত্র তফেল উদ্দীন গাজী, আফিলউদ্দীন গাজীসহ তাদের ওয়ারেশরা জমিতে চলাচলের একমাত্র এ পথটি দেখিয়ে ১১ পরিবারের কাছে জমি বিক্রয় করে। জমির পথের মুখে পশ্চিম পার্শ্বে মৃত তায়জুদ্দীন গাজীর কন্যা ও রহমত কারিগরের স্ত্রী ছালেহা বেগমের কিছু জমি রয়েছে। যাতায়াতের ওই পথে ছালেহার জমি রয়েছে মর্মে দাবী করে সম্প্রতি সে পথ বন্ধ করতে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
সম্প্রতি বর্ষা মৌসুমে মাটির রাস্তাটি সংস্কার করতে ১১ পরিবারের কাছ থেকে টাকা তুলে ইট-বালু এনে সেখানে ফেলা হয়। এতে আবারো বাঁধা সৃষ্টি করে থানায় কয়েকজনের নামে ছালেহা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযাগের তদন্তের জন্য থানায় বসাবসির তারিখ নির্ধারন করলেও ছালেহা হাজির না হওয়ায় জনস্বার্থে সদর থানার এস,আই কিশোর রাস্তা নির্মানের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন। এরপর গত শনিবার সকালে পুনরায় ১১ পরিবারের সদস্যরা রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করলে ছালেহা এতে বাঁধা দিয়ে ব্যাপক গালি-গালাজ ও মারপিট করতে উদ্যত হয়। এই ঘটনায় আবারো নতুন করে আরও একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
এভাবে সে একের পর মিথ্যা ঘটনা দিয়ে নিরীহ লোকজনকে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করছে বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।
প্রেসক্লাবে নিরীহ লোকজন আরও অভিযোগ করেন, ছালেহার জামাতা মাসুম পুলিশের কনষ্টেবল। এই মাসুম তাকে সাধারণ মানুষদের হয়রানী করতে সহায়তা করছে। ছালেহা প্রায় সময় এই পথকে কেন্দ্র করে তার জামাতার ভয় দেখিয়ে থাকে।
তারা আরও জানান, ছালেহার দুই ভাই তফেল উদ্দীন গাজী ও আফিল উদ্দীন গাজীর ষড়যন্ত্রে অসহায় মানুষগুলো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে পথের বিষয়ে সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে উল্টো পথ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এরাই আসল খলনায়ক। তাদের ধোকাবাজিতে দীর্ঘদিন ধরে ১১ পরিবারের শতাধিক নিরীহ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী লোকজন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তাদের লেখনীর মাধ্যমে সদর এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক হয়রানী থেকে রক্ষা ও জনসাধারনের চলাচলের একমাত্র পথটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জোর দাবী জানান।
এ ব্যপারে জানার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের কাছে ফোন দিলে তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেননি।
ব্রহ্মরাজপুরে পথ নিয়ে সৃষ্ট গোলযোগে নিরীহ মানুষদের হয়রানির চেষ্টা
পূর্ববর্তী পোস্ট