নিজস্ব প্রতিনিধি :
ছাগলে ফসল নষ্ট করার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের মধ্যে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার পর মারা গেছেন ছোট ভাই আকবর আলি। এ ঘটনায় সাতজন গ্রেফতার হয়ে একদিনের মাথায় জামিন পাওয়ায় ঘাতকরা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা হুমকি ধামকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের কথা বলছে। অন্যথায় পরিবারের সবাইকে সাইজ করে দেবে বলে শাসিয়েছে।
রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন ‘ আমরা ঘাতকদের হুমকির মুখে ভীত হয়ে পড়েছি। বাড়িতে থাকতে পারছি না’।
লিখিত বক্তব্যে সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আকবর আলির মেয়ে ফতেমা খাতুন বলেন গত ১৩ জুলাই তার চাচা আবদুল গফফার নিজের ২ টি ছাগল নিয়ে মাঠে যান। এ সময় অন্যদের একটি ছাগল পাটপাতা খেয়ে ফেলছে দেখে তাকে ধরে রাখেন। এ নিয়ে ওই ছাগলের মালিক পক্ষের সাথে তার বাদানুবাদ হয়। স্থানীয়রা তা পরে মিটিয়ে দেন। এর কিছুক্ষন পর মুসল্লিদের সাথে তিন ভাই আবদুল গফফার, মো. রইসউদ্দিন ও আকবর আলি নামাজ পড়তে বালিয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়া জামে মসজিদে যান। তিনি জানান নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর মুহুর্তে কয়েকজন সন্ত্রাসী মসজিদে ঢুকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে তিন ভাইকে। মুসুল্লিদের বাধার মুখে সন্ত্রাসীরা থেমে গেলেও গুরুতর আহত হন ছোট ভাই আকবর আলি। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। আকবর আলিকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল পরে খুলনা ও সবশেষে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ১৬ জুলাই মারা যান তিনি । লাশ বাড়িতে আনার পর পুলিশ ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে। এর আগে হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে সাতক্ষীরা থানায় মামলা করেন ভাই আবদুল গফফার। আকবর আলির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রোজিনা খাতুন সেই ১০ জনকে দ্বিতীয়বার আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন প্রথম মামলার সাত আসামিকে পুলিশ আটক করলেও একদিনের মাথায় তারা জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি আসে। আকবরের মৃত্যুর পর পুলিশ আর কোনো আসামিকে ধরেনি।
ফতেমা খাতুন বলেন হত্যা মামলার আসামি আহসান সরদার, আক্তারুল সরদার, আবদুল্লাহ সরদার, মোতালেব, আবু তালেব , কুদ্দুস মোড়ল, ইদ্রিস আলি, আছাদুল সরদার, বিল্লাল হোসেন, আবদুস সাত্তার বাড়িতে না থাকলেও মাঝে মাঝে এসে এলাকায় মহড়া দিয়ে যাচ্ছে। তারা ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেছে।
অভিযোগ করে তারা বলেন প্রধান আসামি আহসানের ভাই কিবরিয়া মালয়েশিয়া থেকে ফোনে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের। একইভাবে হুমকি দিচ্ছে আসামি আবদুল্লাহ ও প্রধান আসামি আহসান সরদার।
ফতেমা খাতুন এর প্রতিকার দাবি করে বলেন তার বাবাকে হত্যার পরও কিভাবে আসামিরা হুমকি দিতে পারে। এখন পর্যন্ত গ্রামে পুলিশ কোনো অভিযান চালায়নি জানিয়ে তারা বলেন ‘ আমাদের আতংক দুর করুন। আসামিদের গ্রেফতার করে আইনে সোপর্দ করুন’। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত আকবর আলির স্ত্রী রোজিনা খাতুন, দুই মেয়ে ফতেমা ও নাজমা, দুই ছেলে ইমরান ও ইমাম, বোন আমেনা খাতুন, দুই ভাই রইসউদ্দিন ও আবদুল গফফার, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গির হোসেন, জাকির হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা।
২১.০৭.২০১৯