নিজস্ব প্রতিনিধি : একাধিক নাশকতা মামলার আসামীকে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর উদয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ প্রাপ্ত ওই শিক্ষক হলেন, সদর উপজেলার ধুলিহর খাদিজাতুল কোবরা মাদ্রাসার সাবেক সহকারী শিক্ষক আহসান হাবিব। তার নামে ২টি চার্জশিটভূক্ত মামলাসহ একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। মামলাগুলোতে তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক আহসান হাবিব জানান, বোঝেন তো এটি পলিটিক্যাল মামলা, জামিনে আছি। তাছাড়া মামলাও পলিটিক্যাল, চাকরিও নিয়েছি পলিটিক্যাল নেতাদের ধরে। এতে কোন সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, গত ৬ জুলাই এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় উদয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ২ জন ও বাহিরের ৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ৫ সদস্যের নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও এ. করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান উল্লাস, প্রধান শিক্ষক রুকসানা পারভীন, একজন বিদ্যুৎসাহী সদস্য, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান এবং ডিজি প্রতিনিধি ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ।
তিনি খাদিজাতুল কোবরা মাদ্রাসা থেকে গত ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে চাকুরী ছেড়ে ৯ জুলাই উদয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদ্রোহি ও নাশকতা মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, দুটি মামলার চার্জশীটে তার নাম রয়েছে। তবে মামলাগুলো পলিটিক্যাল, সেগুলোতে তিনি এখন জামিনে রয়েছেন বলে জানান।
এদিকে, বে-সরকারি কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেনা মর্মে মহামান্য হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ৯ মে একটি রায় দেন। কিন্তু সে রায় উপেক্ষা করে এ. করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান উল্লাস দীর্ঘ দিন ধরে শহরের নবারুন বালিকা বিদ্যালয় ও উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি সভাপতি হওয়ার পর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নবারুন বালিকা বিদ্যালয়ের তার স্ত্রীসহ একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা ব্যাপী এখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ ব্যাপারে উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমিনুর রহমান উল্লাস জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিবের নিয়োগের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার মামলার বিষয়টি জানতে পেরে তার সকল প্রক্রিয়াসহ তার বেতনও বন্ধ রাখা হয়েছে। বে-সরকারি কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্ব প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার বিধান রয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০১৮ সালের ওই রায়টি কলেজের জন্য প্রযোজ্য। এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
ডিজি প্রতিনিধি ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, এ ব্যাপারে জানার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি উল্লাসের কাছে ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। বে-সরকারি কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সময় কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। ##
সাতক্ষীরায় নাশকতা মামলার আসামীকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ !
পূর্ববর্তী পোস্ট