নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোমরায় নাশকতা মামলার আসামীর নেতৃত্বে এক ব্যবসায়ির গুদাম ঘর ও সীমানা বেড়া ভাঙচুর করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ফুলতলা নামকস্থানে এ ঘটনা ঘটে।
ভোমরা বন্দরের সিএণ্ডএফ এজেন্ট মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জিএম আমীর হামজা জানান, গত ৩১ জানুয়ারি তিনি জনৈক গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে পাঁচ শতক জমি কেনেন। গত ১২ ফেব্র“য়ারি পাশ্ববর্তী নয় শতক জমি তিনি আব্দুল ওহাবের সন্তানদের কাছ থেকে পাঁচ বছরের জন্য লীজ নেন। গত ১৭ ফেব্র“য়ারি পাথরসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের ব্যবসার জন্য মোট ১৪ শতক জমিতে প্রাচীর নির্মাণ করে সেখানে গুদাম ঘর নির্মান করার চেষ্টা করলে একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম তার ছেলে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী নাশকতার মামলার আসামী মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন বাধা দেন। এ ঘটনায় তিনি গত ৫ মার্চ সাতক্ষীরা সহকারি জজ আদালতে মামলা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চান। ২৮ মে রফিকুল ইসলামসহ তিনজন নোটিশ পাওয়ার পরও আদালতে হাজির হননি। একপর্যায়ে গত ২১ আগষ্ট সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ মোঃ নাসিরউেদ্দিন ফরাজী তার অনুকুলে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দেন। বৃহষ্পতিবার তিনি ওই জমিতে টিনের চাল দিয়ে গুদামঘর নির্মাণ করছিলেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সময় প্রতিপক্ষ হারুন অর রশীদের ছেলে রফিকুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, রফিকুলের ছেলে ২০১৩ সালের নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামী (মামলা নং-এস টি সি-২৯৯/১৩) মিজানুর রহমান, শহীদুলের ছেলে মিঠুন হোসেনসহ ২৫/৩০ জন তার নির্মাণাধীন ঘর ও প্রাচীর ভাঙচুর করে। এ সময় তারা পুলিশের উপস্থিতিতে কাটা তারের বেড়া দেওয়া সীমানা প্রাচীর তুলে দিয়ে ঘরের মধ্যে থাকা কয়েকটি ফ্যান ও ক্যাশ বাক্সে থাকা টাকা লুটপাট করে। ভাঙচুর ও লুটপাটে বাধা দেওয়ায় তার কর্মচারি শফিকুল ইসলাম, সোহেল রানা, আবুল হোসেন ও রায়হান ইসলামকে মারপিট করে।
জানতে চাইলে মিজানুর রহমান ২০১৩ সালে কক্সবাজারে থাকাকালিন নাশকতার মামলার আসামী হওয়া ও পরে জেল খাটার কথা স্বীকার করে বলেন, সাবেক তহশীলদার গোলাম মোস্তফার এক একর ৬০ শতক জমির মধ্যে ১৯৯৬ সালে তার মা ফতেমা ও মামা চৌবাড়িয়া গ্রামের আফছার আলীসহ কয়েকজন এক একর ৫৫ শতক জমি কেনেন। বাকী পাঁচ শতক জমি বিক্রির জন্য গোলাম মোস্তফা স্থানীয় সমাজ কল্যাণ সংঘের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নেন। এরপর ক্লাবের পক্ষ থেকে ওই জমিতে নামাজের জন্য পাকা স্থান তৈরি করা হয়।
মিজানুর রহমানের অভিযোগ, মা ফাতেমা ও মামা আফছার আলীর নামে জমি হলেও গত ৩১ জানুয়ারি গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে পাঁচ শতক জমি কিনে মা ও মামার নামীয় ৩৫ বছর দখলীয় জমি দখল করার চেষ্টা করে আমীর হামজা। স্থানীয় মহিলা মেম্বরের ছেলে নুরুজ্জামান ওই জমি নিয়ে এডিএম কোর্টে ১৪৫ ধারায় মামলা করে। মামলায় তার মা ও মামাকে বিবাদী না করে বাবাকে বিবাদী করা হয়। তবে দেওয়ানী আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তার জানা নেই উল্লেখ করে বলেন, বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে ম্যাশিন ও লোকজন দিয়ে তাদের দখলীয় সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে আমীর হামজা। পরে সেখানে নতুন করে ঘর নির্মাণ করে জমি জবরদখল করার চেষ্টা করলে তারা বাধা দেন।
সদর থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকালে রফিকুল ইসলামের অভিযোগ পেয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি ভোমরায় যান। উভয়পক্ষকে সেখানে কোন ভাঙচুর বা নির্মাণ কাজ না করার জন্য বলে ঢালিপাড়া পর্যন্ত চলে আসার পর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে আবারো সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভোমরায় যেয়ে আমীর হামজার নির্মাণাধীন গুদাম ঘরের টিনের চাল ও দেয়াল ভাঙচুর করা অবস্থায় দেখি। এবিষয়ে ভুক্তভোগী জি এম আমির হামজা বাদী হয়ে ৬ আগস্ট সাতক্ষীরা রফিকুল ইসলাম, নাশকতা মামলার আসামী মিজানুর রহমানসহ ৪ জনের নামে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং- ২১।
ভোমরায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভাঙচুর ॥ থানায় মামলা
পূর্ববর্তী পোস্ট