আসাদুজ্জামান: ‘আমাদের অফিসে এসে কেউ হয়রানি হবে না, কারো কাছ থেকে অবৈধ সুযোগ সুবিধা নেব না, আমাদের অফিস দুর্নীতিমুক্ত থাকবে’ এই বলে সাতক্ষীরার রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে জেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা করলেন জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল।
উল্লেখ্য, এর মাত্র দুইদিন আগে গত শুক্রবার সাতক্ষীরার জনপ্রিয় নাগরিক সংগঠন ‘নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরা’ দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে স্বাগত সাতক্ষীরাতেও অবিলম্বে এই অভিযান পরিচালনার দাবিতে সাতক্ষীরায় গণমিছিল ও সমাবেশ করে। সামবেশে বক্তারা জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন,”আপনি আপনার অধীনস্ত কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নিন।”
রোববার বিকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘দুর্নীতিমুক্ত অফিস, নেট-পাটা উচ্ছেদ, ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রিন সাতক্ষীরা বাস্তবায়ন, সেবাদান পদ্ধতি ও সেবা সহজীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এই শপথ বাক্য পাঠ করান।
সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ভূমি নিয়ে যেখানে কাজ হয়, প্রতিটি জায়গায় মানুষ হয়রানি হয়, মানুষ যেন হয়রানি না হয়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে। আইনে যা আছে তাই করতে হবে। কারো কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে বেআইনি কাজ করা যাবে না। আমাদের উপর যে দায়িত্ব তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আপনারা করছেন না তা বলবো না। কিন্তু ভূমি সেবা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে। এজন্য নিজের কাছে প্রশ্ন করুন। সব পেয়ে যাবেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী দুর্নীতির সাথে জড়িত। অনেক জায়গায় প্রতিষ্ঠানিক দুর্নীতি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। অনেকে হয়তো ভাবেননি আগামী দিনগুলোতে কি হতে যাচ্ছে। আর দুর্নীতি নয়।
কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এবং তা প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় প্রসিকিউশনের নির্দেশ দিয়েছি। প্রত্যেক অফিসে দুর্নীতিমুক্ত লিখে বোর্ড টানাতে হবে। কিন্তু শুধু বোর্ডেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। এটা নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এম.এম মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান ও আরডিসি দেওয়ান আকরামুল হকসহ প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রত্যেক উপজেলার এসি ল্যান্ড, ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, কানুন গোসহ রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।