নিজস্ব প্রতিবেদক: উপকূলীয় তিন জেলার জলাবদ্ধতা লবণাক্ততা ও অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আরও সাড়ে তিন লাখ টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। ব্রি উদ্ভাবিত ১০০ টি জাতের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে এই লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব ।
সাতক্ষীরা বাগেরহাট ও খুলনা এই তিন জেলায় জনসংখ্যা অনুযায়ী ধানের চাহিদা প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন। অথচ গড় উৎপাদন ২০ লাখ টনের কাছে। উদ্বৃত্ত সাত লাখ টন জানিয়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে।
সোমবার ‘খুলনা-যশোর অঞ্চলে বোরো ধানের আবাদ ও ফলন বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এই তথ্য প্রকাশ করেন আয়োজকরা। ব্রি মহাপরিচালক ড. শাহাজাহান কবিরের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা শহরের একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সনৎ কুমার সাহা।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পরিচালক চন্ডী দাস কুন্ডু, ড. তমাল লতা আদিত্য, কাজী আবদুল মান্নান, ড. মো. ইব্রাহিম, মোহাম্মদ আলি প্রমূখ। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে তিন জেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।
ধান উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে উৎপাদন এলাকা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে কর্মশালায় বলা হয় এ অঞ্চলে নিট জমি রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর। এখানে দুই ফসলী ও এক ফসলী চাষের সুযোগ রয়েছে। ধানের বালাই ব্লাস্ট এক ধরনের ক্যান্সার উল্লেখ করে কর্মশালায় বলা হয়, এই রোগ সারানো কঠিন হলেও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা দমন করা সম্ভব। তিন জেলায় চিংড়ি ঘের রয়েছে দুই লাখ হেক্টর জমিতে। এসব এলাকায় লবণাক্ততার অতিমাত্রিক প্রভাবকে হারিয়ে দিয়েও প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে চিংড়ি ও লবণ সহিষ্ণু ধান উৎপাদিত হচ্ছে। উপকূলীয় এ এলাকায় ২৮ জাতের স্থলে ৬৭ জাতের ধান উৎপাদন আরও লাভজনক বলে উল্লেখ করেন তারা।
জলাবদ্ধতা, জলবায়ু সংকট এবং লবণাক্ততাকে চ্যালেঞ্জে নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া কৃষি বিভাগ পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহ করবে।
গত পাঁচ বছরে আগের তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কর্মশালায় জানানো হয়। চিংড়ি ঘেরের জমি অনেক বেশি উর্বর উল্লেখ করে আয়োজকরা আরও বলেন, বর্তমানে শ্রমিকের অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। এজন্য কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের চেষ্টা চলছে। জৈবিক পদ্ধতিতে পোকা দমনের সুফল উল্লেখ করে তারা বলেন, সেচ ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে হবে।