খেলার খবর: টানা দুই জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ খেলায় আগামী সোমবার জিততে না পারলে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি।
শনিবার লাহোরে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান করে বাংলাদেশ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভারের ২০ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের বিশাল জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক পাকিস্তান।
দলের জয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজ। দলের জয়ে ৪৪ বলে ৭টি চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ৬৬ রান করেন অধিনায়ক বাবর আজম। এছাড়া ৪৯ বলে ৯টি চার ও এক ছক্কায় ৬৭ রান করেন হাফিজ।
১৩৭ রানের মামুলি স্কোর তাড়া করতে নেমে দলীয় ৬ রানে তরুণ ওপেনার আহসান আলীর উইকেট হারায় পাকিস্তান। আহসানকে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন শফিউল ইসলাম। তার গতির বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন আহসান। আগের ম্যাচে অভিষেকে ৩৬ রান করা এ তরুণ ওপেনার শনিবার ফেরেন ৭ বলে শূন্য রানে।
এরপর ওয়ান ডাউনে নামা মোহাম্মদ হাফিজকে সঙ্গে নিয়ে ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলেরর জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক বাবর আজম।
হারলেই ট্রফি হাতছাড়া। জিতলে সিরিজে ফেরার সুযোগ। এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্য আর স্লো মোশন ব্যাটিংয়ের কারণে সম্মানজনক স্কোর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ফিফটিতে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা।
শনিবার পাকিস্তানের লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
শনিবার প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৫ রানে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করা নাঈম এদিন ফেরেন গোল্ডেন ডাকে। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি।
ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংস মেরামত করতে পারেননি মেহেদী হাসান। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ায়ের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিলেটে শ্রীলংকার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ১১ রানে আউট হওয়া এ অলরাউন্ডার দুই বছর পর জাতীয় দলে ফিরে করেন ১২ বলে মাত্র ৯ রান।
৪.২ ওভারে দলীয় ২২ রানে মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মেহেদী। তার আগে ১২ বলে একটি ছক্কায় ৯ রান করে ফেরেন তিনি।
হাসনাইনের করা ওই ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। কিন্তু সরফরাজের বদলে দলে জায়গা পাওয়া উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান কটবিহাইন্ড করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাচটি তিনি গ্লাভস বন্দি করতে পারেননি। ১৬ রানে লাইফ পান তামিম।
চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে দলের হাল ধরতে পারেননি জাতীয় দলের ওপেনার লিটন কুমার দাস। ১৪ বলে মাত্র ৮ রান করে শাদাব খানের ঘূর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
১৪.১ ওভারে দলীয় ৮৪ রানে মোহাম্মদ হাসনাইনের আবেদনে সারা দিয়ে তামিম ইকবালকে এলবিউব্লিউ আউট দেন আম্পায়ার। ৪৪ রানে ব্যাটিংয়ে থাকা তামিম রিভিউ নিয়ে সফল হন।
হাসনাইনের করা ওই ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে থার্ডম্যানে দাঁড়িয়ে থাকা হারিস রউফের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। তার আগে ২০ বলে এক চার ও সমান ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। তার বিদায়ে ১৪.৪ ওভারে ৮৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ইনিংসের শুরু থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যাওয়া তামিম ৪৪তম বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। ফিফটির পর হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। ১৭.৪ ওভারে দলীয় ১১৭ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন তিনি। তার আগে করেন ৫৩ বলে ৬৫ রান।
ইনিংসের শেষ ওভারে হারিস রউফের করা প্রথম বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ১২৬ রানে ১২ বলে ১২ রানে ফেরেন তিনি। এরপর আমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে যান সৌম্য সরকার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রানে ইনিংস গুটায় বাংলাদেশ। ৪ বলে ৮ আর ৫ বলে ৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন আমিনুল ও সৌম্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, মেহেদী ৯, আমিনুল ৮*, লিটন ৮, সৌম্য ৫*, হাসনাইন ২/২০)।
পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭/১ (হাফিজ ৬৭*, বাবর ৬৬*)।
ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।