দেশের খবর: দেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও তিন রোগী শনাক্ত হয়েছেন; এর মধ্য দিয়ে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
এই ভাইরাসে বুধবার প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানানো হয়।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। নারীর বয়স ২২ বছর, আর পুরুষদের একজনের বয়স ৬৫ অন্যজনের ৩২ বছর। তিনজন একই পরিবারের সদস্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আক্রান্তরা ইতালিফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। এই তিনজনই স্থানীয়ভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছন। তাদের অন্য কোনও রোগ নেই। সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর দেয় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। আর বুধবার করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়। সুস্থ হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতাল ছেড়েছেন তিনজন।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার ৯৫৫ জন; মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৭৪৯ জনের।
গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে। পরে তা চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। ইতালি থেকে পুরো ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস।
সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন পর্যন্ত এ রোগে মৃত্যুহার ৩.৪ শতাংশ, যেখানে মৌসুমি ফ্লুতে মৃত্যুহার থাকে ১ শতাংশের নিচে। তবে করোনায় ৯ বছরের নিচের কেউ মারা যায়নি। প্রবীণদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।