দেশের খবর: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে আইইডিসিআর। করোনাভাইরাস যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সেজন্য বিদেশ ফেরতসহ নানা ব্যক্তিকে দেশজুড়ে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখছে সরকার। উদ্দেশ্য, কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে তাকে সুস্থ মানুষের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা।
কেবল আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী হোম কোয়ারেন্টিন ও লকডাউনসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ভাইরাসটি থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের বিদেশ ফেরতসহ অনেকে হোম কোয়ারেন্টিন মানছেন না। বলার অপেক্ষা রাখে না, এটি সর্বক্ষেত্রে আমাদের আইন ও নিয়ম না মানার সংস্কৃতিরই বহিঃপ্রকাশ।
তবে এটি যেহেতু মহামারী ঠেকানোর প্রচেষ্টার অংশ, সেহেতু এখানে কোনো ধরনের ছাড় বা শিথিলতা মেনে নেয়ার উপায় নেই। বিদেশ ফেরতসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ যাদের মধ্যেই দেখা যাবে, তাদের সবাইকে যে কোনো উপায়ে হোম কোয়ারেন্টিনে, তা সম্ভব না হলে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
একইসঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে যে, কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা হল তাদের নিজেদের ও নিকটজনদের, সর্বোপরি দেশবাসীকে প্রাণঘাতী করোনা মহামারী থেকে রক্ষার প্রচেষ্টা মাত্র। ফলে এটি মেনে চলতে হবে নিজেদের স্বার্থেই।
অনেক জায়গায় কোয়ারেন্টিন না মেনে জনসমক্ষে চলাচল, এমনকি খোদ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আশার কথা, সরকার এ ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই মধ্যে কোয়ারেন্টিন না মানায় বিভিন্ন স্থানে চার প্রবাসীকে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কারাদণ্ডের পথেও অগ্রসর হতে হবে।
যে কোনো ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে সচেতনতা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেলফ কোয়ারেন্টিন, হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা, মানুষকে প্রতিটি বিষয়ে সতর্ক করা ইত্যাদি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজনে লকডাউন করা হবে বলেও শীর্ষস্থানীয় একজন মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন।
এসব কিছু ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি বিদেশ ফেরত ও সম্ভাব্য উপসর্গধারীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা না যায়। সবাইকে মনে রাখতে হবে, কোয়ারেন্টিন কোনো সাজা নয়, নিজের ও পরিবারের, সর্বোপরি দেশবাসীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার একটি প্রচেষ্টা মাত্র। ইতিমধ্যে বিভাগীয় কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককেও কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কানাডায় খোদ প্রধানমন্ত্রী সপরিবারে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এগুলো সাধারণ মানুষের জন্য উদাহরণ। করোনাভাইরাস থেকে দেশ ও দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য জনগণের সচেতন আচরণ এবং সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার এখনই সময়। অন্যথায় এর জন্য আমাদের চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।