অনলাইন ডেস্ক : মহামারীর মধ্যে এসেছে এবারের ঈদুল ফিতর; সংক্রমণ এড়াতে বিধিনিষেধ মেনে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজে অংশ নিয়েছেন হাজারো মুসলমান।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে এবারের ঈদের প্রথম জামাত হয় সকাল ৭টায়। মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান তাতে ইমামতি করেন।
নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতদের জন্য দোয়া করা হয়। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। বালা মুসিবত থেকে দেশকে সুরক্ষা চাওয়া হয় আল্লাহর কাছে।
মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, “…..হেফাজত করো। ….. সুস্থতা দান করো….।”
মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম জামাত শেষ হলে দ্বিতীয় জামাত শুরু হয় সকাল ৮টায়। সকাল ৯টায়, সকাল ১০টায় এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে পর্যায়ক্রমে আরও তিনটি জামাতের আয়োজন রয়েছে এ মসজিদে।
মহামারীর মধ্যে এবার ঈদগাহ বা খোলা ময়দানে ঈদের জামাত করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ঈদের নামাজ মসজিদে মসজিদেই হচ্ছে।
শারীরিক দূরত্ব রেখে কাতার করতে হয়েছে বলে ভেতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদের বাইরের প্রাঙ্গণে, রাস্তায়, খোলা জায়গাতেও অনেককে নামাজে দাঁড়াতে দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস অতি সংক্রামক বলে এবার বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে নামাজ পড়তে হয়েছে সবাইকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নুরুল ইসলাম বলেন, “যারা মসজিদের আসছেন, তাদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করতে হচ্ছে। সবাইকে বলা হয়েছে বাসা থেকে ওজু করে মাস্ক পরে মসজিদে যেতে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসা বাধ্যতামূলক।”
নামাজ শেষে কোলাকুলি বা হাত মেলানোতেও এবার নিষেধ ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ তা মেনে চললেও দুই-একটি ব্যতিক্রমও দেখা গেছে।
ঈদ জামায়াতে শিশু ও বৃদ্ধদের অংশ না নিতে বলা হলেও দেখা গেছে অনেকে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের নামাজে এসেছেন। প্রবীণদেরও বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে দেখা গেছে।
প্রথম জামাতে যোগ দিতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই বায়তুল মোকাররমে আসতে শুরু করে মানুষ। নিয়ম মাফিক মাঝে দূরত্ব রেখে তারা বসেন।
মাইকে বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে যাতে সবাই দূরত্ব বজায় রেখে বসেন। মসজিদের ভেতরে তা মেনে চলেছেন প্রায় সবাই। তবে মসজিদের বারান্দা ও সিঁড়িতে কোথাও কোথাও ভিড় হয়েছে। নামাজ শেষে গেইটেও বের হওয়ার জন্য কিছুটা হুড়াহুড়ি দেখা গেছে।
সকাল ৭টার প্রথম জামাতের খতবা পাঠের সময় বায়তুল মোকাররমের দুই গেইটের বাইরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন দ্বিতীয় জামাতে যোগ দিতে আসা মানুষ।
আবহাওয়া ভালো থাকলে এমনিতে দেশে ঈদের প্রধান জামাতটি হয় ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই জামাতে নামাজ পড়েন ঈদের সকালে। এবার তা হয়নি।
প্রতিবছর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের আয়োজন হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় খোলা মাঠে ঈদ জামাত আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় শোলাকিয়া ময়দানেও এবার ঈদ জামাতের আয়োজন নেই।