মডেলিংয়ের কথা ভাবছেন? এর জন্য তো হালকা-পাতলা, মেদহীন শরীরই উপযুক্ত। যেকোনো মডেলের প্রাণপন চেষ্টা থাকে নিজেকে একেবারে ‘জিরো ফিগারে’ নিয়ে আসার। কারণ না হলেই তো বিপদ, ছিটকে পড়ার ভয়। তার জন্য খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত ভুলে যান মডেলরা।
কিন্তু মডেল দুনিয়ার ‘সর্বজনগ্রাহ্য’ এই রূপেই বিপদ দেখছে ফ্রান্স। সেখানে অতিরিক্ত পাতলা শারীরিক গড়ন হলেই ভেঙে যেতে পারে আপনার মডেল হওয়ার স্বপ্ন। এমনকি আইন ভাঙার অপরাধে কঠোর জরিমানার মুখেও পড়তে হবে।
সম্প্রতি ফ্রান্স এক আইনের মাধ্যমে অতিরিক্ত হ্যাংলা-পাতলা শারীরিক গড়নের মডেলদের নিষিদ্ধ করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এর লক্ষ্য হচ্ছে বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং প্রকৃত সুন্দর খুঁজে বের করা। অবশ্য এর আগে ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।
আইন অনুযায়ী, দেশটিতে কোনো রুগ্ন শারীরিক গড়নের ফ্যাশন মডেল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মডেলদের এখন থেকে তাদের সার্বিক শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রশংসাপত্র লাগবে। প্রত্যেক মডেলকে বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) মান পূরণ করতে তো হবে। পাশাপাশি বিশেষ করে বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ওজনও মান অনুযায়ী থাকতে হবে।
মডেলদের ডিজিটালে রূপান্তরিত ছবিগুলো আগামী ১ অক্টোবর থেকে চিহ্নিত করা হবে। ছবিতে যদি দেখা যায় কোনো মডেল চাতুরি করেছেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগেও বিলটির প্রাথমিক সংস্করণে বলা হয়েছিল মডেলদের বিএমআই মান বজায় থাকতেই হবে। কিন্তু তখন দেশটির মডেলিং সংস্থাগুলো এর প্রতিবাদ করেছিল।
চূড়ান্ত সংস্করণেও একই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে মডেলদের ওজন, বয়স, শারীরিক গঠন বিবেচনা করে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে তাঁরা খুব হাড্ডিসার বা কঙ্কালসার কি না।
যদি কোনো মডেলিং এজেন্সি এই আইন ভঙ্গ করে তবে তাকে ৭৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে। এমনকি ছয় মাসের জেলও হতে পারে।
নিম্ন ওজনের মডেলদের ক্ষেত্রে আইন পাস করা দেশ হিসেবে ফ্রান্সই প্রথম নয়। এর আগে ইতালি, স্পেন ও ইসরায়েল এ ধরনের আইন পাস করেছে। ইউরোপে বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যারা, ‘মডেলযোগ্য’ শরীর গঠনের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। তারা সাধারণত বিএমআই মানের নিচে থাকার জন্য পরামর্শ দেয়, যাতে নারীদের আরো আকর্ষণীয় মনে হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ধরে এ ধরনের অভ্যাস মানুষের মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।