কলারোয়া প্রতিনিধি : সরকারি টাকায় ঘর করে দেয়ার নাম করে জয়দেব মেম্বার টাকা মেরে খেয়েছে। সে শুধু সরকারি টাকা না গরীবের খাবারেও ভাগ বসায় এটাই তার প্রমান। সাতক্ষীরার ডিসি সৎ মানুষ। তিনি তদন্ত করতে না পাঠালে জয়দেব মেম্বারের দূর্নীতি ধরাও পড়ত না, আমার মতো গরীবের কপালে ঘরও জুটত না। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এভাবেই কথাগুলো বলেন কলারোয়া উপজেলার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের গৃহহীন অতি দরিদ্র নেপাল দাস।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নে ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের অসহায় গৃহহীন নেপাল দাসের নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প’র আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ বরাদ্ধ হয়। চলতি বছরের প্রথম দিকে ওই বাস গৃহ নির্মাণে ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্ধ হয়। জয়নগর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য জয়দেব সাহার বিরুদ্ধে নেপালের বাসগৃহ নির্মানে নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা আত্মসাত করে। এ ঘটনা কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের নজরে আসলে বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রজীত সাহার উপর তদন্তভার দেয়া হয়। গত ১৯ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া এলাকার সরকারি সুবিধাভোগী নেপাল দাশ ও ফেরদৌসির নামে বরাদ্দকৃত নির্মাণ সম্পন্ন করা ঘর পরিদর্শন পূর্বক তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান।
বাসগৃহ নির্মানে দূর্নীতি ও সরকারি টাকা হরিলুটের অভিযোগে জয়দেব মেম্বার কে বরখাস্ত করাসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে এমন খবরে জয়দেব সাহা নিজেকে বাঁচাতে নেপাল দাসের বাসগৃহ পূন: নির্মান করে দেয়ার কাজে হাত দেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নেপাল দাসের ঘরের পিছন দিকের পুরো অংশ ভেঙে ফেলে নতুন করে সেখানে কাজ শুরু করেছে একদল রাজমিন্ত্রি। ঘরের কাজ করা নির্মান শ্রমিকরা জানায়, জয়দেব মেম্বার ছয় জন শ্রমিককে রাত দিন কাজ করে বাড়িটি যথাসম্ভব বসবাসের উপযোগী করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সে মোতাবেক তারা বাসগৃহটি দৃষ্টিনন্দন না হলেও গরীব নেপাল দাস পরিবার পরিজন নিয়ে যাতে বসবাস করতে পারে সে চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।
নেপাল দাস আক্ষেপ করে জানায়, ‘আমার জমিতে ঘর হবে। কোথায় কীভাবে ঘর করলে আমাদের সুবিধা হবে জয়দেব মেম্বার আমাদের সেই সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে যবুথবুভাবে আমাদের সরকারি ঘর নির্মাণ করেছে। ঘর নির্মাণের সময় নিন্ম মানের ইট, বালু ও সীমিত সিমেন্ট দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করলে জয়দেব মেম্বার আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধর করে। সরকার আমাকে যা দিয়েছে আমি সেটুকুই চাই। তিনি আরও জানান, আমার ঘরের এখনও জানালা লাগানো হয়নি অথচ মেম্বার বলছে জানালা দেবে না। বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছে’। সে একটা পাকা চোর। ঘর দেয়ার নামে সে টাকা মেরে খেয়েছে। দূর্নীতির ঘরে ধরা খেয়েছে জয়দেব সাহা।
এ বিষয়ে জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন আল মাসুদ বাবু জানান, ৩নং ইউপি সদস্য জয়দেব সাহা ইউনিয়ন পরিষদে কোন রেজুলেশন ছাড়াই অবৈধভাবে নতুন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে দশ দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি করে ওই ঘরটি নির্মাণ করেন’। তদন্ত কমিটির কাছে জয়দেব মেম্বারের দূর্নীতি ধরা পড়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জয়দেব মেম্বার জানান, সরকারের চোখে নেপাল দাসের বাস গৃহ নির্মান মান সম্পন্ন হয়নি। বসবারের জন্য আগের চেয়ে ভালো করে তার ঘর করে দেয়া হচ্ছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট