নিজস্ব প্রতিনিধি : ভাঙ্গানমারী ৮০ বিঘা, ১০০ বিঘা, বৈরাগির চক চিংড়ীখালী, নোড়ার চক ও মৌতলা হতে কালিগঞ্জ যমুনা নদীর দুই পাশে বসবাসরত ভূমিহীনসহ সম্প্রতি খালের ধার হতে উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনদের নামে খাস সম্পত্তি বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন সমিতি।
রোববার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়কের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি কওছার আলী। সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভূমিহীণ সমিতির উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, ভূমিহীণ সমিতির উপদেষ্টা আলহাজ্ব ওহাব আলী সরদার, ভূমিহীণ নেতা মোমিন হাওলাদার, পিয়ার আলী মুন্সি, ছাত্তার, আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল গফফার, মোকছেদ আলী, আতিয়ার রহমান, শওকত আলী, হাফিজুর রহমান, শাহজাহান আলী ছোট বাবু, মাহমুদ হাসান ক্যাপটেন প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন শেষে মিছিল সহকারে সাতক্ষীরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেতৃবৃন্দ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা জেলার প্রায় ৭০ হাজার একর খাস জমি ও জলা রয়েছে এবং ভূমিহীন পরিবার রয়েছে প্রায় এক লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার। উক্ত খাস জমি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে পরিবার প্রতি দেড় বিঘা খাস জমি বন্টন করা হলে সাতক্ষীরা জেলায় একটি পরিবারও ভূমিহীন থাকবেনা, থাকবেনা ভূমিহীন ভূমিদস্যুদের মধ্যে বিরোধ, সাতক্ষীরা হবে শান্তির জেলা, মডেল জেলা, এটি হবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভূমিহীনদের জন্য একটি অবিস্মরনীয় ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আন্তরিকতা থাকারপরও কতিপয় আমলাদের কারণে আপনার সে প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
সরকারি আইনেই বলা রয়েছে খাস সম্পত্তি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দিতে হবে। কিন্তু সেটি করা হচ্ছে না। অন্যদিকে ভূমিদস্যুরা হাজার হাজার বিঘা সম্পত্তি দখল করছেন। এছাড়া সম্প্রতি নোড়ার চকে ৫০৩ টি ভূমিহীণ পরিবারকে কথিত ভূমিহীন বলে উচ্ছেদের পায়তারার তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা।
স্মারকলিপিতে তাদের দাবি সমূহ: ভাঙ্গানমারী ৮০ বিঘা, ১০০ বিঘা, বৈরাগির চক চিংড়ীখালী, নোড়ার চক ও মৌতলা হতে কালিগঞ্জ যমুনা নদীর দুই পাশে বসবাসরত ভূমিহীনদের দ্রুত খাস জমি চিরস্তায়ী বন্দোবস্ত দিতে হবে। সাতক্ষীরা জেলা শহরসহ সকল খালের ধার হতে উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনদের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী পদক্ষেপ ৯লক্ষ গৃহ নির্মাণ। অসহায় গৃহহীণদের জন্য এধরনের মহতী উদ্যোগ বাংলার মানুষের কাছে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী পদক্ষেপ ৯লক্ষ গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু ঘর দেওয়া হয়েছে। সে সময় উক্ত ঘর পে তে অনেক জনপ্রতিনিধিকে ঘর প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল গৃহহীনদের। সাতক্ষীরা কুখরালি বৈশপাড়া কলোনিতে বসবাসরত ভূমিহীনরা দীর্ঘদিন ডিসিআর কেটে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাদের স্কায়ার ফুটে টাকা দাবি করা হচ্ছে। তাদের কাছে জনপ্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করা হচ্ছে। তারা সকলেই ভ্যান-রিক্সা চালক ও দ্বীনমজুর। তাদের পক্ষে এতটাকা দেওয়া অসম্ভব। আমাদের দাবি তাদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হোক। এমতাবস্থায় সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন সমিতির পক্ষ থেকে আকুল আবেদন আমাদের দাবি সমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কে ভূমিহীনমুক্ত মডেল জেলা হিসেবে ঘোষণার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট