অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতালে) রেজিস্ট্রার ডা. রবিন চন্দ্র হালদারের বাসায় ১১ বছরের এক গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার নিপা বাড়ৈ জানিয়েছে, তাকে প্রায়ই বেধড়ক মারধর করতেন ডা. রবিনের স্ত্রী রাখি দাস।
নিপার বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে। আহত অবস্থায় গত বুধবার রাতে তাকে গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ। ডা. রবিন চন্দ্রের বাড়িও একই উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে। তার ঢাকার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত নিপা।
জানা গেছে, জামবাড়ি গ্রামের ননী বাড়ৈর মেয়ে নিপাকে ছয় মাস আগে ডা. রবিনের ঢাকার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানো হয়। শিশুটি তার স্বজনের কাছে অভিযোগ করেছে, ছোটখাটো অজুহাতে তাকে বেদম মারধর করতেন চিকিৎসকের স্ত্রী। তার গলা চেপে ধরা হতো এবং দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া হতো। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায়। ২১ ফেব্রুয়ারি মারধরের এক পর্যায়ে তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন রাখি দাস। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি নিপাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয় দেখান রাখি। বাড়িতে আসার পর স্বজনরা নিপার শরীরে জখম দেখে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে নির্যাতনের বিষয়টি জানায়।
উজিরপুর থানার এসআই মাহতাব হোসেন বলেন, স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাত ১টার দিকে নিপাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ। শিশুটি কিছুটা ভীতসন্ত্রস্ত। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে অধিকাংশই পুরোনো। মাথার একটি আঘাত সাম্প্রতিক হওয়ায় সেখানে দুটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
এসআই মাহতাব বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় শিশুটির পরিবার মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিপার চাচা তপন বাড়ৈ জানান, এ বিষয়ে চিকিৎসকের স্ত্রী রাখি দাসকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উল্টো হুমকি দিয়ে বলেন, ‘শিশুটির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে রাখা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে ডা. রবিন চন্দ্র হালদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।