প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সাতক্ষীরা শহরব্যাপী মটর ভ্যান-রিক্সা বিরোধী অভিযানের কারণে সহাস্রাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অবিলম্বে মটর চালিত ভ্যান রিক্সা বিরোধী অভিযান বন্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরায় মটর চালিত ভ্যান রিক্সা উচ্ছেদ প্রতিরোধ সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরায় এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব এ্যাডঃ ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, গত ১৫ মে থেকে সাতক্ষীরা শহরব্যাপী চলছে মটরভ্যান বিরোধী এক নৈরাজ্যকর সাড়াশী অভিযান। ইতিমধ্যে শত শত মটর ভ্যান আটক করার পাশাপাশি অনেককে মারপিট ও লাঞ্চিত করা হয়েছে। ফলে সাতক্ষীরা শহর এখন মটর ভ্যান শুন্য হয়ে পড়ায় বেকার হয়ে হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্তমান জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন এই জেলায় আসার পর থেকে মটর রিক্সা-ভ্যানের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে দাবি দাওয়া নিয়ে গেলে তিনি শহরে প্যাডেল চালিত রিক্সা চলা চলের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি নিজে ২’শ রিক্সা, সদর এমপি এক’শ রিক্সা এবং সমাজাসেবা অধিদপ্তর থেকে ভ্যানের বডি পরিবর্তনের সহায়তা করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কারো রিক্সা প্রদান বা কারো ভ্যানের বডি পরির্বতনে সহায়তা করা হয়নি। এছাড়া শারীরিক সক্ষমতা না থাকায় অধিকাংশ চালকরা এখন আর প্যাডেল চালিত রিক্সা ভ্যান চালাতে চায় না। আবার অনেকে খন্ডকালিন মটর ভ্যান চালিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখা পড়া করছে।
তিনি বলেন, এই জেলায় ২২ লাখের মধ্যে শহরে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। প্রতিদিন বিভিন্ন কর্মকান্ডের কারনে প্রায় ২/৩ লাখ মানুষ এই শহরে চলাচল করে। তাদের অধিকাংশই এই মটরভ্যান ব্যবহার করে। ১৫ মে থেকে মটর ভ্যান বিরোধী অভিযানের কারনে এসব মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এখন সময়মত কোচিংয়ে যেতে পারছে না। মটর চালিত রিক্সা ভ্যান না থাকার করানে বাচ্চারা সময় মত বাড়ি ফিরতে পারছে না। ফলে দুচিন্তায় থাকতে হচ্ছে অভিভাবকদের। গ্রাম থেকে সবজিসহ অন্যান্য পন্য শহরে আনতে না পারায় বাড়ছে দ্রব্যমূল্য।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় প্যাডেল চালিত রিক্সা ভ্যান এখন মটর ভ্যানে পরিণত হয়েছে। এই মটর রিক্সা ভ্যানের কারনে মানুষ এখন দ্রুত চলাচল করতে পারছে। সব কিছু যখন ইন্টারনেটের গতিতে চলছে ঠিক তখনই সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এই জেলার মানুষকে মধ্যযুগীয় গরুরগাড়ি, ঠেলাগাড়ি ও প্যাডেল চালিত ভ্যান রিক্সায় ফিরিয়ে আনতে চান।
ভ্যান রিক্সা উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মটর চালিত ভ্যান রিক্সা বিরোধী অভিযান ও হয়রানি বন্ধ, বিনা পয়সায় আটক মটর চালিত ভ্যান রিক্সা ছেড়ে দেয়া এবং রেজিস্ট্রেশন প্রদান করে মটর চালিত ভ্যান রিক্সা আধুনিকরণে প্রয়োজনী পদক্ষেপ গ্রহণসহ পাঁচ দফা দাবি জানান।
পূর্ববর্তী পোস্ট