দেশের খবর: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চার দফা সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। শুক্রবার (৭ জানুয়ারী) কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সুপারিশের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৫০তম সভায় সুপারিশ চারটি গৃহীত হয়েছে।
চার দফা সুপারিশ :
১. পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে। প্রয়োজনে কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য কমিটি আইনি ব্যবস্থা যেমন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরামর্শ দিচ্ছে।
শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, হাত পরিষ্কার রাখা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন স্থানে পুনরায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে সব সামাজিক (বিয়ের অনুষ্ঠান, মেলা ইত্যাদি), ধর্মীয় (ওয়াজ মাহফিল) ও রাজনৈতিক সমাবেশ এ সময় বন্ধ করতে হবে। সভা/কর্মশালার ব্যবস্থা অনলাইনে করা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের বিষয়ে নিয়মিত নজরদারির বিষয়ে পরামর্শক কমিটি গুরুত্বারোপ করে।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে সব সামাজিক (বিয়ের অনুষ্ঠান, মেলা ইত্যাদি), ধর্মীয় (ওয়াজ মাহফিল) ও রাজনৈতিক সমাবেশ এ সময় বন্ধ করতে হবে। সভা/কর্মশালার ব্যবস্থা অনলাইনে করা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের বিষয়ে নিয়মিত নজরদারির বিষয়ে পরামর্শক কমিটি গুরুত্বারোপ করে।
২. শিক্ষার্থীসহ সবাইকে দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৩. সব পয়েন্ট অব এন্ট্রিতে স্ক্রিনিং, কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন আরো জোরদারে সুপারিশ করা হচ্ছে।
৪. সংক্রমণ বেড়ে গেলে তা মোকাবিলায় হাসপাতাল প্রস্তুতি বিশেষ করে পর্যাপ্ত সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবাহের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিচ্ছে কমিটি।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৪৬ জন। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশে। করোনায় এ পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে; শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৩ জনে। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হন ১ হাজার ১৪০ জন। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়ায় যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের খবর। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ১০০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় দেশটিতে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৬ হাজার।
শুক্রবার ভারতে দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ। একইসঙ্গে সাত মাস পর করোনায় দৈনিক শনাক্ত এক লাখের গন্ডি পার করল দেশটি। গত বছরের জুন মাসে দৈনিক এক লাখ সংক্রমণের গন্ডি পার করেছিল ভারত। সর্বশেষ এই সংখ্যাসহ দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫২ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৬ জনে।