নিজস্ব প্রতিনিধি : দেবহাটা আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম। তিনি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. রুহুল হক এমপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা বা তার সম্পর্কে কোন কটূক্তি করেননি বলে দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য ঈষৎ সংিক্ষপ্ত আকারে নি¤েœ প্রকাশ করা হলোÑ
রবিবার সকাল ১১টায় দেবহাটা উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে লিখিত বক্তব্যে রেজাউল ইসলাম বলেন, গত ১০ই জুন ২০১৭ উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান (মনি) আমাদের জড়িয়ে যে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রেখেছেন তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এছাড়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আ. লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এমপিকে নিয়ে যে, কূরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আমাদের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে সেটাও সঠিক নয় এবং আমরা ইফতার মাহফিলে রুহুল হক সাহেবকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি তা সত্য নয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার, আলহাজ্ব আব্দুল গণি এবং দেবহাটার সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. গোলাম মোস্তফা উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বাবু নারান চন্দ্র সরকার উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য অহিদুল ইসলাম, উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (মনি), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান (কেল্টু), সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলামসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান (মনি) যে বিবৃতি দিয়েছে তা পড়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ আপামর জনসাধারণ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়েছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে সহিংসতা চলাকালীন সময়ে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি পালিয়ে ছিলেন। ২০১৩ সালের ২১ শে নভেম্বর দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হানকে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন মনিরুজ্জামান (মনি) এবং শহীদ আবু রায়হান একই স্থানে বসে থাকলেও হত্যার পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত রায়হানের পাশে থাকা সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়া আজিজ হত্যার মূল নায়ক জামাত ক্যাডার আফগান জিয়ার দেহরক্ষী নাজমূল এখন মনিরুজ্জামান (মনি)’র দেহরক্ষী। তাছাড়া সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র শিবিরের প্রথম সারির নেতা মাসুদ রানাও সাধারণ সম্পাদকের ছত্রছায়ায় থেকে তার পূর্বের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যারা প্রকাশ্য রাস্তায় জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের কবর তৈরি করেছিল সেই সাইফুল্লাহ, কালা রবিউল এদের ছত্রছায়ায় দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ সকল নাশকতাকারীরা বর্তমানে আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। যারা বিগত ২০০৬ সালের ২৯ শে অক্টোবর জামাত বিএনপি কর্তৃক পারুলিয়া আওয়ামীলীগ কার্যালয়টিতে যে নজিরবিহীন তা-ব চালিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহমদকে মারাত্মকভাবে আহত করেছিল, সে সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান কেল্টুসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করে তারা। সেই হামলাকারীরা বর্তমানে সাধারণ সম্পাদকের নিত্য দিনের সঙ্গী। বর্তমানে মেয়াদ উত্তীর্ণ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান (মনি) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফারুক হোসেন রতন মিলে দেবহাটা উপজেলাকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। এরা টিআর, কাবিখা, কাবিটা, সৌর বিদ্যুৎ, পল্লী বিদ্যুতে কোটি কোটি টাকার লুটপাট করলেও এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এর কারনে জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা আ. লীগের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। দেবহাটা উপজেলা আ. লীগের এই বিভেদ বিভাজন এবং অনৈক্যের জন্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক দায়ী। সভাপতি মুজিবর রহমানের অর্থনৈতিক উত্থান আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপকেও হার মানাবে। তিনি ৫০০০/- টাকা বেতনভুক্ত ঘের কর্মচারী থেকে বর্তমানে বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক। এমন উন্নয়ন দেশের সাধারণ মানুষের কপালে জুটলে পূর্বেই বাংলাদেশ উন্নত জাতিতে পরিণত হতো। সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফারুক হোসেন (রতন) এখন “আগুল ফুলে কলা গাছ”। এই তিন দাপুটে নেতার আমলনামার খবর দুঃখজনক। সংগঠন পরিচালনার ব্যর্থতার দায়ভার না নিয়ে প্রকৃত ত্যাগী, মুজিব প্রেমিক ২০১৩ সালের ক্ষতিগ্রস্ত নেতাদের নামে সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছেন। উপজেলাবাসী জানে মুজিবর, রতন ও মনি আওয়ামীলীগের “৩ শনি”। যতদিন এই শনি মাননীয় এমপি মহোদয়ের ঘাড়ে ভর করে থাকবে ততদিন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার কাছে পৌঁছাতে পারবে না। উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বাবু নারান চন্দ্র সরকারকে বিগত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পরে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান (মনির) উপস্থিতিতে তার ক্যাডার বাহিনী মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত করেছেন। এই সকল বিতর্কিত নেতাকর্মীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের উন্নয়ন ম্ল্যান করে দিচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন সুষ্ঠু তদন্তমাফিক শহিদ আবু রায়হানসহ যে দুইজন নেতাকে ২০১৩ সালে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার প্রকৃত আসামিদেরকে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। সাথে সাথে যে সকল হাইব্রিড, কাউয়াদের আশ্রয়দাতাদেরকেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আ’লীগের শিল্প, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও দেবহাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব আব্দুল গনি, সাবেক উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ, উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নারান চন্দ্র সরকার, উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য অহিদুল ইসলাম, উপজেলা ,শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (মনি), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান কেল্টু, ইউপি সদস্য আবুল কাশেম, মুজিবর রহমান প্রমুখ।
পূর্ববর্তী পোস্ট