পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ রাত জেগে কাজ করেন। যাদের বেশিরভাগই ২০-৩০ বছর বয়সী। এত কম বয়সে এমন রাত জেগে কাজ করা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। দীর্ঘ সময় রাত জাগলে শরীরের বায়োলজিকাল ক্লক বদলে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেহের নিজস্ব যে কাজ করার ধরণ রয়েছে তাতেও বদল আসে। ফলে ধীরে ধীরে একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে।
ঘুমানোটা আপাত দৃষ্টিতে সহজ কাজ মনে হলেও আদতে কিন্তু এই সময় আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে সহজে ঘুম এসে যায়। এখন রাতের বেলা যদি কেউ জেগে থেকে দিনের বেলা ঘুমতে শুরু করেন, তাহলে এই সব কেমিকেলগুলি ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে ঘুমের পরিধি কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আয়ুও কমে যায়। এছাড়াও আরও নানা ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় শরীরকে। যেমন…
১। যারা নাইট শিফটে জব করেন চিকিৎসা শাস্ত্রে তাদেরকে “কার্সিনোজেনিক শিফট” নামে ডাকা হয়। দীর্ঘদিন রাত জেগে কাজ করলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়। সেই কারণেই অনেক গবেষক এই শিফট টাকে “গ্রেভিয়ার্ড শিফট” নামেও ডেকে থাকেন।
২। রাতের বেলা জেগে থেকে দিনের বেলা ঘুমালে শরীরে মেলাটোনিন হরেমানের ক্ষরণ ঠিক মতো হয় না। ফলে ঘুম কমে যেতে শুরু করে। সেই সাথে অবসাদ এবং মানসিক চাপে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, যারা নাইট শিফট করেন, তারা খুব খিটকিটে মেজাজের হয়ে যান। মেলাটোনিন হরমোনের ঠিকমত ক্ষরণ না হওয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে।
৩। একটি গবেষণা পত্র অনুসারে যারা রাত জেগে কাজ করেন, তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সাধারণের তুলনায় বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসকরা সাধারণত নাইট শিফটে জব করতে নিষেধ করে থাকেন।
৪। যারা রাত জেগে কাজ করেন, তাদের ক্যান্সার, হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ওজন বৃদ্ধি পাবার মতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষের থেকে বেশি থাকে।
৫। সারা রাত জেগে থাকার পর দিনের বেলা ঘুমালে ক্ষুধা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা যেমন কমে যায়, তেমনি বিপাক প্রক্রিয়াও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। সেই সঙ্গে অল্প কিছু খেলেই গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
৬। সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে ধীরে ধীরে ত্বকের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব পরতে শুরু করে। ফলে শরীরের বয়স বাড়তেও শুরু করে। সেই সাথে ত্বকের সৌন্দর্যও হ্রাস পেতে শুরু করে। সূত্রঃ বোল্ড স্কাই।